HSC ICT প্রথম অধ্যায়
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি ? এর সুবিধা ও অসুবিধা
১। উপাত্ত ও তথ্যের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
২। তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৩। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরণ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৪। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা বিশ্লেষণ করতে পারবে।
৫। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন যন্ত্র বর্ণনা করতে পারবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি?
তথ্য সংগ্রহ,
সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, ব্যবস্থাপনা ও
তথ্য
একস্থান থেকে
অন্য
স্থানে
নির্ভরযোগ্যভাবে আদান-প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হচ্ছে তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি।
তথ্য
ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি
ভালোভাবে বুঝার
জন্য
চলো
দেখি
– তথ্য,
যোগাযোগ, প্রযুক্তি শব্দ
তিনটি
দ্বারা
কী
বুঝায়?
তথ্য বলতে
কী
বুঝায়?
ডেটা
(উপাত্ত)
প্রক্রিয়াকরণ পরবর্তী অর্থপূর্ণ রূপ
হলো
তথ্য
(ইনফরমেশন)।
তথ্য
দ্বারা
কোন
ব্যক্তি বা
বস্তু
সম্পর্কে পুর্নাঙ্গ ধারণা
পাওয়া
যায়।
মানুষ
বিভিন্ন কাজে
ইনফরমেশন বা
তথ্য
ব্যবহার করে।
যোগাযোগ বলতে কী বুঝায়?
কোন
যন্ত্রের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে তথ্য
এক
স্থান
থেকে
অন্য
স্থানে
আদান-প্রদান করাকে বলা
হয়
যোগাযোগ। যেমনঃ
মোবাইল
ফোনে
কথা
বলা,
ইমেইল
করা
ইত্যাদি।
প্রযুক্তি বলতে কী বুঝায়?
বিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্র
প্রয়োগ
করে
যখন
কোন
কিছু
উদ্ভাবন করা
হয়,
তখন
সেই
উদ্ভাবনকে বলা
হয়
প্রযুক্তি। যেমন-
মোবাইল
ফোন,
কম্পিউটার ইত্যাদি হল
বিভিন্ন প্রযুক্তি।
অন্যভাবে বলা
যায়,
প্রযুক্তি হলো
জ্ঞানের এমন
একটি
শাখা
যেখানে
প্রকৌশল এবং
ব্যবহারিক বিজ্ঞান নিয়ে
কাজ
করা
হয়।
তথ্য প্রযুক্তি বলতে কী বুঝায়?
তথ্য সংগ্রহ,
এর
সত্যতা
ও
বৈধতা
যাচাই,
সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ, আধুনিকরন, পরিবহন,
বিতরন
ও
ব্যবস্থাপনার সাথে
সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে বলা
হয়
তথ্য
প্রযুক্তি।
যোগাযোগ প্রযুক্তি বলতে কী বুঝায়?
একস্থান থেকে
অন্য
স্থানে
নির্ভরযোগ্যভাবে তথ্য
আদান-প্রদানে ব্যবহৃত প্রযুক্তিই হচ্ছে যোগাযোগ প্রযুক্তি। অন্যভাবে বলা
যায়,
ডেটা
কমিউনিকেশন ব্যবস্থার সাথে
সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিকে যোগাযোগ প্রযুক্তি বলে।
যেমনঃ
টেলিফোন, মোবাইল
ফোন,
ইন্টারনেট ইত্যাদি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রকারভেদ
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রয়োগক্ষেত্রের উপর
ভিত্তি
করে
বিভিন্ন ভাগে
ভাগ
করা
যায়।
যেমনঃ
কম্পিউটিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমঃ কম্পিউটিংসহ সকল
ধরণের
ইলেক্ট্রনিক ডেটা
প্রসেসিং; যেখানে
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা ও
এক্সপার্ট সিস্টেম ইত্যাদির ব্যবহার করা
হয়।
ব্রডকাস্টিংঃ রেডিও
এবং
টেলিভিশন যা
বিশাল
জনগোষ্ঠীর কাছে
একমুখী
তথ্য
সম্প্রচার করে
থাকে
।
টেলিকমিউনিকেশনসঃ ফিক্সড টেলিফোন ও মোবাইল বা
সেলুলার ফোনসহ
সকল
ধরণের
টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে
উভয়মূখী ডেটা
কমিউনিকেশন করে
থাকে।
ইন্টারনেটঃ ইন্টারনেট হলো
পৃথিবী
জুড়ে
বিসতৃত
অসংখ্য
নেটওয়ার্কের সমম্বয়ে গঠিত
একটি
বিরাট
নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা। ইন্টারনেট কে
যোগাযোগ ব্যবস্থা ও
বলা
হয়।
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির সুবিধা
·
তথ্য
ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির সাহায্যে পারিবারিক বা
ব্যবসায়িক সদস্যদের সাথে
দ্রুত
যোগাযোগ করা
যায়।
·
ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে অটোমেটেড বা
ডিজিটাল করেছে।
ফলে
কম
খরচেই
ব্যবসা
পরিচালনা করা
যায়।
·
যেকোন
জায়গা
থেকে
চিকিৎসা সেবা
প্রদান
বা
গ্রহণ
করা
যায়।
·
অফিসের
কার্যক্রমকে সহজ
করেছে।
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির অসুবিধা
·
তথ্যের
গোপনীয়তা নষ্ট
হচ্ছে।
·
উন্নয়নশীল ও
উন্নত
দেশগুলোর মধ্যে
ডিজিটাল বৈষম্য
তৈরি
হচ্ছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন যন্ত্রের বর্ণনা
মোবাইল ফোন (Mobile Phone)
মোবাইল
ফোন
বা
সেলুলার ফোন
হল
তারবিহীন টেলিফোন বিশেষ।
মোবাইল
অর্থ
ভ্রাম্যমান বা
“স্থানান্তরযোগ্য”।
এই
ফোন
সহজে
যেকোনও
স্থানে
বহন
করা
এবং
ব্যবহার করা
যায়
বলে
মোবাইল
ফোন
নামকরণ
করা
হয়েছে। মোবাইল
নেটওয়ার্ক ষড়ভূজ
আকৃতির
সেল
নিয়ে
গঠিত
বলে
এটি
“সেলফোন”
নামেও
পরিচিত। মোবাইল
ফোন বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করে
বলে
অনেক
বড়
ভৌগোলিক এলাকায় এটি
নিরবিচ্ছিন্নভাবে সংযোগ
দিতে
পারে।শুধু কথা
বলাই
নয়,
আধুনিক
মোবাইল
ফোন
দিয়ে
আরও
অনেক
ধরণের
সেবা
গ্রহন
করা
যায়।
এর
উদাহরণ
হচ্ছে
খুদে
বার্তা
-এসএমএস বা টেক্সট মেসেজ
সেবা, এমএমএস বা মাল্টিমিডিয়া মেসেজ
সেবা, ই-মেইল সেবা, ইন্টারনেট সেবা, ইনফ্রারেড, ব্লুটুথ সেবা, ক্যামেরা, গেমিং, ব্যবসায়িক বা
অর্থনৈতিক ব্যবহারিক সফটওয়্যার ইত্যাদি। যেসব
মোবাইল
ফোন
এইসব
সেবা
এবং কম্পিউটারের সাধারন কিছু সুবিধা
প্রদান
করে,
তাদেরকে স্মার্ট ফোন নামে ডাকা হয়।
রেডিও (Radio)
তথ্য
ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির একটি
শক্তিশালী মাধ্যম
হলো
রেডিও।
যার
মাধ্যমে একমুখী
তথ্য
সম্প্রচার করা
যায়।
রেডিও
কমিউনিকেশন ব্যবস্থায় শব্দকে
তড়িৎ
চুম্বকীয় তরঙ্গে
রূপান্তরিত করে
এক
স্থান
থেকে
অন্য
স্থানে
পাঠানো
হয়।
এই
ব্যবস্থায় রেডিও
ট্রান্সমিটার, রেডিও
রিসিভার এবং
এন্টেনা থাকে।
রেডিও
কমিউনিকেশন ব্যবস্থায় প্রধানত এএম,
এফএম
ও
মাইক্রোওয়েভ ব্রডকাস্ট পদ্ধতি
ব্যবহার করা
হয়।
বর্তমানে বহুল
জনপ্রিয় হলো
এফএম
রেডিও।AM
এর
পূর্নরুপ Amplitude Modulation, FM পূর্নরুপ
Frequency Modulation।
টেলিভিশন (Television)
টেলিভিশন একটি
জনপ্রিয় মাধ্যম। যার
মাধ্যমে একমুখী
তথ্য
সম্প্রচার করা
যায়।
এই
ব্যবস্থায় একটি
নির্দিষ্ট সম্প্রচার কেন্দ্র থেকে
সংকেত
পাঠানো
হয়
এবং
ঐ
সম্প্রচার কেন্দ্রের আওতাধীন সকলে
টেলিভিশন যন্ত্রের মাধ্যমে প্রোগ্রাম দেখতে
পায়।
বিভিন্ন TV standards –NTSC- National Television System Committee,
PAL – Phase Alternation by Line ইত্যাদি।
বিশ্বগ্রাম | বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ | বিশ্বগ্রাম এর সুবিধা
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। বিশ্বগ্রামের ধারণা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। বিশ্বগ্রাম
প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৩। বিশ্বগ্রাম
প্রতিষ্ঠার সুবিধা ও
অসুবিধাসমূহ ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৪। বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট
প্রধান উপাদানসমূহ
বর্ণনা করতে
পারবে।
বিশ্বগ্রাম কী? গ্লোবাল ভিলেজ কি ?
বিশ্বগ্রাম হচ্ছে
এমন একটি
ধারণা যেখানে
পৃথিবীর সকল
মানুষ একটি
একক সমাজের
ন্যায় বসবাস
করবে এবং
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি
ব্যবহারের মাধ্যমে
একে অপরের
সাথে যোগাযোগ
ও সেবা
প্রদান করবে।
অর্থাৎ তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি
নির্ভর বিশ্বকে
বিশ্বগ্রাম বলা
হয়।
বিশ্বগ্রাম এর জনক কে ?
বিশ্বগ্রামের এই
ধারণা ১৯৬২
সালে ক্যানাডিয়ান
দার্শনিক মার্শাল ম্যাকলুহান(Marchall Mcluhan) সর্বপ্রথম তার
‘The Gutenberg Galaxy’ বইয়ে উল্লেখ
করেন। এই
জন্য মার্শাল ম্যাকলুহানকে বিশ্বগ্রামের জনক
বলা হয়।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার উপাদানসমূহ কী কী ?
হার্ডওয়্যারঃ বিশ্বগ্রামে যে
কোন ধরণের
যোগাযোগ এর
জন্য প্রয়োজন
উপযুক্ত হার্ডওয়্যার।
যেমন- কম্পিউটার এবং
পেরিফেরাল যন্ত্রপাতি,
মোবাইল, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি।
সফটওয়্যারঃ কোন সমস্যা সমাধানের
লক্ষ্যে প্রোগ্রামিং
ভাষায় লিখিত
নির্দেশনার সমাবেশকে
প্রোগ্রাম বলে।
আবার কতগুলো
প্রোগ্রামের সমাবেশকে
সফটওয়্যার বলে।
বিশ্বগ্রাম প্রতিষ্ঠার
জন্য হার্ডওয়্যার
এর পাশাপাশি
বিভিন্ন প্রোগ্রাম
বা সফটওয়্যার
প্রয়োজন। বিভিন্ন
ধরণের সফটওয়্যার
যেমন- অপারেটিং সিস্টেম,
ব্রাউজিং সফটওয়্যার,কমিউনিকেশন সফটওয়্যার
ইত্যাদি।
নেটওয়ার্ক বা কানেক্টিভিটিঃ বিশ্বগ্রামের মেরুদন্ড
হলো নেটওয়ার্ক
বা কানেকটিভিটি
যার মাধ্যমে
বিভিন্ন উপাত্ত
ও তথ্য
এই বিশ্বগ্রামের
প্রতিটি মানুষের
নিকট পৌছাতে
পারে।
বিশ্বগ্রামের মেরুদণ্ড কি ?
বিশ্বগ্রামের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনটি ?
ডেটা বা ইনফরমেশনঃ সুনির্দিষ্ট ফলাফল
বা আউটপুট
পাওয়ার জন্য
প্রসেসিংয়ে ব্যবহৃত
কাঁচামাল সমুহকে
ডেটা বা
উপাত্ত বলে।
অপরদিকে ডেটা
প্রক্রিয়াকরণ পরবর্তী
অর্থপূর্ণ রূপ
হলো ইনফরমেশন
বা তথ্য। বিশ্বগ্রামে এই
ডেটা বা
ইনফরমেশন মানুষের
প্রয়োজনে একে
অপরের সাথে
শেয়ার করা
হয়।
মানুষের সক্ষমতাঃ যেহেতু বিশ্বগ্রাম
মূলত তথ্য
প্রযুক্তি নির্ভর
ব্যবস্থা ,তাই বিশ্বগ্রাম বাস্তবায়নের
জন্য মানুষের
সচেতনতা ও
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
অবকাঠামো ব্যবহারের
সক্ষমতা থাকতে
হবে। অর্থাৎ তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
অবকাঠামো ব্যবহারের
সক্ষমতা না
থাকলে বিশ্বগ্রাম বাস্তবায়ন
সম্ভব নয়।
বিশ্বগ্রাম এর ইতিবাচক প্রভাব ও নেতিবাচক প্রভাব
বিশ্বগ্রাম এর সুবিধা
১। স্বল্প
সময়ের মধ্যে
বিশ্বব্যাপী নিরাপদ
ও দ্রুত
যোগাযোগ করা
যায়।
২। পৃথিবীব্যাপী
তথ্যের ব্যাপক
উৎস সৃষ্টি
হয়েছে এবং
তথ্য পাওয়া
সহজলভ্য হয়েছে।
৩। প্রযুক্তি
গ্রহণ ও
ব্যবহারের ক্ষেত্রে
মানুষের সক্ষমতা
বৃদ্ধি পেয়েছে।
৪। মানুষের
জীবন যাত্রার
মান উন্নয়ন
হয়েছে।
৫। মানুষের
কাজের দক্ষতা
বৃদ্ধি পেয়েছে।
৬। ব্যবসা
বাণিজ্যের প্রসার
এবং লেনদেন
সহজ ও
দ্রুততর হচ্ছে।
৭। ঘরে
বসেই শিক্ষা
গ্রহণ করা
যায়।
৮। ঘরে
বসেই উন্নত
স্বাস্থ্য ও
চিকিৎসা সেবা পাওয়া
যাচ্ছে।
৯। অনলাইনে
বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে
লেখালেখি করার
মাধ্যমে কোন
বিষয়ে মতামত
প্রদান এবং
সচেতনতা বৃদ্ধি
করা যাচ্ছে।
১০। বিশ্বব্যাপী
কর্মসংস্থানের ব্যপক
সুযোগ সৃষ্টি
হয়েছে।
বিশ্বগ্রাম এর অসুবিধা
১। ইন্টারনেট
প্রযুক্তির ফলে
অনেক ক্ষেত্রে
তথ্যের গোপনীয়তা
বজায় থাকছে
না।
২। সহজেই
অসত্য বা
মিথ্যা এবং
বানোয়াট সংবাদ
ছড়িয়ে সামাজিক
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি
হচ্ছে।
৩। প্রযুক্তি
পরিবর্তনের কারণে
গ্লোবাল নেটওয়ার্ক
শেয়ার করার
জন্য অনুন্নত
দেশগুলো উন্নত
দেশগুলোর প্রতি
নির্ভরশীল হয়ে
পড়ছে।
৪। সাইবার
আক্রমন বাড়ছে।
৫। ইন্টারনেটের
ফলে পর্ণোগ্রাফি
সহজলভ্য হওয়ায়
যুবসমাজে সামাজিক
অবক্ষয় সৃষ্টি
হচ্ছে।
বিশ্বগ্রামের ধারণা সংশ্লিষ্ট প্রধান উপাদান সমূহ
১। যোগাযোগ
(Communication)
২। কর্মসংস্থান
(Employment)
৩। শিক্ষা
(Education)
৪। চিকিৎসা
(Treatment)
৫। গবেষণা
(Research)
৬। অফিস
(Office)
৭। বাসস্থান
(Residence)
৮। ব্যবসা
বাণিজ্য (Business)
৯। বিনোদন
ও সামাজিক
যোগাযোগ (Entertainment and Social
Communication)
১০। সংবাদমাধ্যম
(News)
১১। সাংস্কৃতিক
বিনিময় (Cultural Exchange)
টেলিকনফারেন্সিং | টেলিমেডিসিন | ফ্রিল্যান্সিং | আউটসোর্সিং | ই-কমার্স
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। যোগাযোগের
বিভিন্ন ধরণ
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
২। যোগাযোগের
সবচেয়ে সহজ
মাধ্যম গুলো
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৩। কর্মসংস্থানের
ক্ষেত্রে তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ভূমিকা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৪। শিক্ষা ক্ষেত্রে তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ভূমিকা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৫। চিকিৎসা
ক্ষেত্রে তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ভূমিকা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৬। গবেষণা
ক্ষেত্রে তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ভূমিকা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৭। অফিস
পরিচালনা ও
ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
ভূমিকা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৮। স্মার্ট
হোম তৈরিতে
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
ভূমিকা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৯। ই-কমার্সের ধারণা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
১০। বিনোদন ও
সামাজিক যোগাযোগ
ক্ষেত্রে তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
ভূমিকা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
যোগাযোগ:
নির্ভরযোগ্যভাবে তথ্যের
আদান প্রদানকে
বলা হয়
যোগাযোগ এবং
যে প্রযুক্তি
ব্যবহার করে
দূরবর্তী স্থানে
অবস্থিত বিভিন্ন
ব্যক্তিবর্গ পরস্পরের
সাথে দ্রুতগতিতে
যোগাযোগ করতে
পারে, তাকে যোগাযোগ
প্রযুক্তি বলা
হয়। তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির ব্যবহার
যোগাযোগের ক্ষেত্রে
অভাবনীয় পরিবর্তন
সাধন করেছে, সেই সাথে বিশ্বকে
একটি গ্রামে
রূপান্তর করেছে
|
যোগাযোগ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। যেমন–
১। মৌখিক বা বাচনিক যোগাযোগ- মোবাইল ফোন,
স্কাইপী, ভাইবার, টেলিকনফারেন্সিং, ভিডিও কনফারেন্সিং,
রেডিও, টেলিভিশন, ইত্যাদি।
২। অবাচনিক যোগাযোগ– মুখের বিভিন্ন
অভিব্যক্তি, চোখের বা
হাতের ইশারা
ইত্যাদি।
৩। লিখিত যোগাযোগ- ই-মেইল(email- Electronic Mail), এসএমএস(SMS- Short Message Service), ফ্যাক্স ইত্যাদি।
বর্তমানে যোগাযোগের সবচেয়ে সহজ মাধ্যমগুলো হলো –
·
ই-মেইল
·
টেলি কনফারেন্সিং
·
ভিডিও কনফারেন্সিং
ই-মেইল কি?
ই-মেইল
হচ্ছে ইলেকট্রনিক
মেইল ।
অর্থাৎ ইলেক্ট্রনিক
যন্তপাতি ব্যবহার
করে ইন্টারনেটের
মাধ্যমে নির্ভরযোগ্যভাবে
বার্তা আদান-প্রদান করার
পদ্ধতি হচ্ছে ই-মেইল। ডাকযোগে চিঠি
পাঠানোর জন্য
যেমন একটি
ঠিকানা থাকতে
হয়, ঠিক তেমনি ই-মেইল ব্যবহারকারী
প্রত্যেকের অদ্বিতীয়
ঠিকানা থাকতে
হয়। উদাহরনঃ
rokonripon1@gmail.com
টেলিকনফারেন্সিং কী ?
ভিন্ন ভৌগোলিক
দূরুতে অবস্থান
করে টেলিকমিউনিকেশন
যন্ত্রপাতি যেমন
টেলিফোন, মোবাইল ফোন
ইত্যাদি ব্যবহার
করে দুই বা ততোধিক
ব্যাক্তিবর্গের সাথে
যোগাযোগ বা
সভা কার্যক্রম
পরিচালনা করার
কৌশল হলো টেলিকনফারেন্সিং। টেলিকনফারেন্সিং ব্যবস্থায়
কোনো সভায়
সকলকে সশরীরে
উপস্থিত না
থেকেই বিশ্বের
যেকোনো প্রান্ত
থেকে উক্ত
সভায় অংশগ্রহন
করতে পারে।
ফলে সময়
ও অর্থ
দুটোই সাশ্রয়ী
হয়। টেলিকনফারেন্সিং
দুই ভাবে
করা যেতে
পারে। যথা-
·
ভিডিও কনফারেন্সিং
·
অডিও কনফারেন্সিং
ভিডিও কনফারেন্সিং কী ?
ভিন্ন ভৌগোলিক
দূরুতে অবস্থান
করে টেলিকমিউনিকেশন
প্রযুক্তির সাহায্যে দুই বা ততোধিক
ব্যাক্তিবর্গের সাথে যুগপৎ উভমুখী ভিডিও এবং
অডিও শেয়ারিং
পদ্ধতিতে যোগাযোগ
বা সভা
কার্যক্রম পরিচালনা
করার কৌশল
হলো ভিডিও কনফারেন্সিং। স্কাইপী, ফেসবুক মেসেঞ্জার,
imo, WhatsApp, viber, ইত্যাদির মাধ্যমে
খুব সহজেই
ভিডিও কনফারেন্সিং
করা যায়।
ভিন্ন ভৌগোলিক
দূরুতে অবস্থান
করে টেলিকমিউনিকেশন
প্রযুক্তির সাহায্যে দুই বা ততোধিক
ব্যাক্তিবর্গের সাথে যুগপৎ উভমুখী
শুধুমাত্র অডিও
শেয়ারিং পদ্ধতিতে
যোগাযোগ বা
সভা কার্যক্রম
পরিচালনা করার
কৌশল হলো অডিও কনফারেন্সিং। ভিডিও কনফারেন্সিং
এবং অডিও কনফারেন্সিং এর
মধ্যে পার্থক্য
হলো, ভিডিও কনফারেন্সিং
এ অডিও এর
পাশাপাশি ভিডিও
শেয়ার হয়
কিন্তু অডিও কনফারেন্সিং এ
শুধুমাত্র অডিও
শেয়ার হয়।
স্কাইপী, ফেসবুক মেসেঞ্জার,
imo, WhatsApp, viber, ইত্যাদির মাধ্যমে
খুব সহজেই
ভিডিও এবং
অডিও কনফারেন্সিং
করা যায়।
কর্মসংস্থানঃ
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি
ব্যবহারের ফলে
দেশ এবং
বিদেশে ব্যপক
কর্মসংস্থানের সুযোগ
সৃষ্টি হয়েছে।
ফ্রিল্যান্সিং এবং
আউটসোর্সিং কর্মসংস্থানের
নতুন দার
উন্মোচন করেছে।
ফ্রিল্যান্সিং এর
মাধ্যমে দেশে
বসে বৈদেশিক
মুদ্রা উপার্জনের
সুযোগ সৃষ্টি
হয়েছে।
আউটসোর্সিং কী?
কোন প্রতিষ্ঠানের
কাজ নিজেরা
না করে
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে তৃতীয়
কোন ব্যাক্তি
বা প্রতিষ্ঠানের
সাহায্যে করিয়ে
নেওয়াকে বলা
হয় আউটসোর্সিং। এই ক্ষেত্রে
প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন
জব শেয়ারিং
ওয়েবসাইটে (যেমন- upwork.com, fiverr.com,
freelancer.com, etc ) তাদের জবগুলো
পোষ্ট করে
থাকে।
ফ্রিল্যান্সিং কী?
কোন প্রতিষ্ঠানের
সাথে দীর্ঘস্থায়ী
চুক্তি না
করে, তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে স্বাধীনভাবে নিজের
দক্ষতা অনুযায়ী
কোন ব্যাক্তি
বা প্রতিষ্ঠানের
চাহিদা মোতাবেক
কাজ করাকে
বলা হয় ফ্রিল্যান্সিং। এই ক্ষেত্রে
একজন ফ্রিল্যান্সার
বিভিন্ন জব শেয়ারিং ওয়েবসাইটে
(যেমন- upwork.com, fiverr.com,
freelancer.com, etc ) তার দক্ষতা
অনুযায়ী জবের
জন্য আবেদন
করে থাকে।যখন
কোন ব্যাক্তি
কোন প্রতিষ্ঠানের
সাথে দীর্ঘস্থায়ী
চুক্তি না
করে তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে স্বাধীনভাবে
নিজের দক্ষতা
অনুযায়ী কোন
ব্যাক্তি বা
প্রতিষ্ঠানের চাহিদা
মোতাবেক কাজ
করে তখন
তাকে ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবী বলা হয়।
শিক্ষাঃ
বিশ্বগ্রাম ধারণায় তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি শিক্ষা
বিস্তারে একটি
শক্তিশালী টুলস।
ফরমাল এবং
নন-ফরমাল
উভয় পদ্ধতিতেই
এটি অত্যন্ত
কার্যকর। বিশ্বগ্রাম
ব্যবস্থায় পৃথিবীতে শিক্ষার
আদি ধ্যান
ধারণার ব্যাপক
পরিবর্তন সাধিত
হয়েছে।
দূরশিক্ষণ কী?
বিশ্বগ্রাম ধারণায় শিক্ষা
গ্রহনের জন্য
কোন শিক্ষার্থীকে
গ্রাম থেকে
শহরে কিংবা
এক দেশ
থেকে অন্য
দেশে যেতে
হয় না।
এতে সময়,
অর্থ, পরিশ্রম, ইত্যাদি সাশ্রয়
হয়। একজন
শিক্ষক ঘরে
বসেই বিভিন্ন
বিষয়ের উপর
ভিডিও টিউটোরিয়াল
তৈরির পর
অনলাইনে শেয়ার
করে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
ব্লগিং করে,
বিভিন্ন সামাজিক
মিডিয়ার সাহায্যে
লাইভ ক্লাস,
ইত্যাদি মাধ্যমে
শিক্ষা দান
করতে পারে
এবং শিক্ষার্থীরাও
ঘরে বসেই
শিক্ষা গ্রহন
করতে পারে।
একজন শিক্ষার্থী
ঘরে বসে
অনলাইনেই পরীক্ষা
দিয়ে নিজেকে
যাচাই করতে
পারে। এমনকি
ঘরে বসেই
ফলাফল জানতে
পারে। এই
ধারণাকে বলা
হয় দূরশিক্ষণ বা ডিসটেন্স লার্নিং।
ইবুক কী?
ইবুক বা ইলেকট্রনিক বুক
বলতে ডিজিটাল
ফর্মে টেক্সট,
চিত্র ইত্যাদি
ডকুমেন্ট বইকে
বুঝায় যা
কোন কম্পিউটার,
ট্যাব, ই-বুক রিডার
ও স্মার্ট
ফোন ইত্যাদি
ব্যবহার করে
পড়া সম্ভব।
এই ইবুকের
সমন্বয়ে তৈরি
হয়েছে অনলাইন
লাইব্রেরি।
অনলাইন লাইব্রেরি কী?
অর্থাৎ অনলাইন লাইব্রেরি হলো এমন একটি
প্ল্যাটফর্ম বা
ওয়েবসাইট যেখানে
ইবুকগুলো সংরক্ষিত
থাকে এবং
একজন পাঠক
একটি স্মার্ট
ডিভাইসে ইন্টারনেট
ব্যবহারের মাধ্যমে
যেকোন বই
পরতে পারে।
অনলাইন লাইব্রেরির
সুবিধা হলো
যেকোন ভৌগোলিক
অবস্থান থেকে
যেকোন সময়
বই পড়া
যায় এবং
একই সাথে
একাধিক পাঠক
একই বই
পড়তে পারে।
চিকিৎসাঃ
বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি
নির্ভর চিকিৎসা
সেবা বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের
বিভিন্ন গবেষণা
মানুষকে এনে
দিয়েছে দীর্ঘ
সুস্থ ও
সুন্দর জীবন।
বিশ্বগ্রাম ধারণায়
বর্তমানে চিকিৎসা
সেবা প্রদান
বা গ্রহনের
জন্য কোন
ডাক্তার বা
রোগীকে এখন
আর গ্রাম
থেকে শহরে
কিংবা এক
দেশ থেকে
অন্য দেশে
যেতে হচ্ছে
না। একজন
চিকিৎসক বিশ্বের
যেকোন স্থানে
বসেই তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে দূরবর্তী
অবস্থানের যেকোন
রোগীকে চিকিৎসা
সেবা দিতে
পারছে এবং তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে রোগী
তা গ্রহণ
করতে পারছে।
টেলিমেডিসিন কী?
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
সাহায্যে ভিন্ন
ভৌগলিক দূরুতে
অবস্থানরত রোগীকে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক,
রোগ নির্ণয়
কেন্দ্র, বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক
ইত্যাদির সমন্বয়ে
স্বাস্থ্যসেবা দেওয়াকে টেলিমেডিসিন বলা হয়।
গবেষণা:
বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় গবেষণা কাজে
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
ব্যবহার অপরিসীম।
পূর্বে দেখা
যেত, একই বিষয়ের উপর
একাধিক বিজ্ঞানী
গবেষণা করছেন
কিন্তু একজন
অন্য জনের
খবর জানতেন
না। বর্তমান
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তি
ব্যবহারের ফলে
বিজ্ঞানীরা তাদের
চিন্তাধারা ইন্টারনেটের
মাধ্যমে প্রকাশ
করতে পারছে।
ফলে পৃথিবীর
যেকোনো প্রান্তে
কোনো নির্দিষ্ট
বিষয়ে গবেষণা
শুরু করলে
ইন্টারনেটের সাহায্যে
সবাই অবগত
হয়। বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায়
তথ্য নিয়ে
গবেষণার জন্য
গবেষককে এক
দেশ থেকে
অন্য দেশে,
বড় কোন
গবেষণা কেন্দ্রে
বা বড়
কোন লাইব্রেরিতে ছুটতে হচ্ছে
না। তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তির কল্যাণে
ঘরে বসে
সহজেই তথ্য
সংগ্রহ করা
যায়।
অফিসঃ
বর্তমান বিশ্ব
গ্রামে পরিবর্তিত
হওয়ায় অফিসের
বর্তমান ব্যবস্থার
ব্যাপক পরিবর্তন
হতে চলেছে।
চাকরিজীবীকে বা
সেবাগ্রহীতাকে একস্থান
থেকে অন্যস্থানে
ছুটতে হচ্ছে
না। পৃথিবীর
যেকোন স্থানে
বসেই অফিসের
কাজকর্ম করা
যায় কিংবা
সেবা গ্রহণ
করা যায়।
অফিসের জন্য
প্রয়োজন হচ্ছেনা
স্থায়ী ঠিকানার
বা কোন
অবকাঠামোর। বদলে
যাচ্ছে অফিসের
ফাইল-পত্র
সংরক্ষণ ও
দৈনন্দিন কাজ
করার পদ্ধতি।
যে সকল
ব্যবস্থা বিশ্বগ্রামের
অফিস ব্যবস্থাকে
বদলে দিয়েছে-
·
কম্পিউটার
·
ইন্টারনেট
·
ওয়েবসাইট
অফিস অটোমেশন কী?
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
প্রয়োগের মাধ্যমে
অফিসের ডকুমেন্ট
তৈরি ও
সংরক্ষন, কর্মকর্তা ও
কর্মচারিদের মধ্যে
অভ্যন্তরীন ও
বহিঃযোগাযোগ ইত্যাদি
বিষয়ে সিদ্ধান্ত
গ্রহণ তথা
বাস্তবায়ন কার্যক্রম
দক্ষতার সাথে
ডিজিটাল পদ্ধতিতে
সম্পন্ন করা
যায়। এই
ধরণের প্রযুক্তি
নির্ভর কার্যক্রমকে
বলা হয় অফিস অটোমেশন।
বাসস্থানঃ
মানুষ যেখানে
বাস করে
সেটিই বাসস্থান।
গতিনুগতিক এই
ধারণা অনেকটাই
বদলে যেতে
শুরু করেছে।
আধুনিক ইন্টারনেটের যুগে
মানুষ এক
দেশে বসেই
অন্য দেশে
ভার্চুয়ালি বিচরণ
বা বসবাস
করতে পারে
। ভিডিও
চ্যাটিং এর
মাধ্যমে উভয়
প্রান্তের মানুষ
একে অপরকে
সামনা-সামনি
দেখছে। সকলেই
হয়ে উঠছেন
ইন্টারনেট অধিবাসী
বা নেটিজেন।
স্মার্ট হোম কী?
বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায়
মানুষের বাসস্থানের
সুযোগ-সুবিধার
ব্যপক পরিবর্তন
হয়েছে। তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
প্রয়োগে স্মার্ট
হোমের ধারণা
তৈরি হয়েছে। স্মার্ট হোম হলো এমন একটি
বাসস্থান যেখানে
রিমোট এর
সাহায্যে যেকোনো
স্থান থেকে
কোন বাডির
সিকিউরিটি কন্ট্রোল
সিস্টেম, হিটিং সিস্টেম,
কুলিং সিস্টেম,
লাইটিং সিস্টেম,
বিনোদন সিস্টেমসহ
বিভিন্ন প্রয়োজনীয়
সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ
করা যায়।
স্মার্ট হোমকে হোম অটোমেশন সিস্টেমও বলা
হয়।
ব্যবসা-বাণিজ্যঃ
অন-লাইন শপিং কী?
বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যের ধারণারও
ব্যপক পরিবর্তন
হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাকে পণ্য
ক্রয়-বিক্রয়ের
জন্য যেতে
হচ্ছে না
এক গ্রাম
থেকে অন্য
গ্রামে কিংবা
এক দেশ
থেকে অন্য
দেশে। বিভিন্ন
ডিভাইসের মাধ্যমে
ক্রেতা-বিক্রেতা
উভয়ই পণ্যের
বাজার সম্পর্কে
খোঁজখবর নিতে
পারছে। পণ্য
উৎপাদনকারী বা
সেবাদানকারী ওয়েবসাইটের
মাধ্যমে সকল
পণ্য বা
সেবার বিবরণ
ছড়িয়ে দিতে
পারছেন বিশ্ববাজারে।
ক্রেতা বা
ভোক্তা বাসায়
বসে ইন্টারনেট
এর সাহায্যে
কোন ই-কমার্স ওয়েবসাইট
থেকে পণ্য
বা সেবা
পছন্দ করে
ক্রয় করেতে
পারছে এবং অনলাইনে মূল্য
পরিশোধ করতে
পারছে, যাকে অন-লাইন শপিং বলা হয়।
ই-কমার্স কী?
ইলেকট্রনিক কমার্স বা ই-কমার্স একটি বাণিজ্য
ক্ষেত্র যেখানে
ইন্টারনেট বা
অন্য কোন
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
এর মাধ্যমে
পণ্য বা
সেবা ক্রয়/বিক্রয় বা
লেনদেন হয়ে
থাকে। কিছু
ই-কমার্স
প্ল্যাটফর্ম এর
উদাহরণ- alibaba.com, amazon.com,
daraz.com.bd rokomari.com ইত্যাদি। আধুনিক
ইলেকট্রনিক কমার্স
সাধারণত ওয়ার্ল্ড
ওয়াইড ওয়েব
এর মাধ্যমে
বাণিজ্য কাজ
পরিচালনা করে।
ই–কমার্স এর ধরণঃ পণ্য বিক্রয়ক্ষেত্র
ও লেনদেনের
প্রকৃতি অনুযায়ী
ই-কমার্সকে
প্রধানত চার
ভাগে ভাগ
করা যায়।
–
১। Business to Consumer (B2C)
২। Business to Business (B2B)
৩। Consumer to Business (C2B)
৪। Consumer to Consumer (C2C)
ই–কমার্স এর সুবিধাঃ
১। ই-কমার্সের প্রধান
সুবিধা হলো
সময় ও
ভৌগলিক সীমাবদ্ধতা
দূর করে।
২। ঘরে
বসে যেকোন
পন্য ক্রয়-বিক্রয় করা
যায় এবং
ক্রয়-বিক্রয়
কৃত পন্যের
মূল্য পরিশোধ
করা যায়
বিভিন্ন ব্যাংকের
ডেবিড-ক্রেডিট
কার্ড, বিকাশ, কুরিয়ার সার্ভিস,
পোষ্ট অফিস
ইত্যাদির মাধ্যমে।
৩। ব্যবসা
শুরু ও
পরিচালনায় খরচ
কম হয়।
৪। বিজ্ঞাপন
ও বিপণন
সুবিধা, বাজার যাচাই
ও তাৎক্ষণিক
অর্ডার প্রদানে
সুবিধা ইত্যাদি।
ই-কমার্স এর অসুবিধাঃ
১। দূরবর্তী
স্থানের পণ্যের
অর্ডার ক্ষেত্র
বিশেষে ব্যয়বহুল।
২। লেনদেনের
নিরাপত্তা সমস্যা।
৩। রিয়েল
পণ্য দেখার
সুযোগ থাকে
না।
৪। ডুপ্লিকেট
পন্যের চটকদার
বিজ্ঞাপন ইত্যাদি।
বিনোদন ও সামাজিক যোগাযোগ:
একটা সময়
মানুষের বিনোদনের
প্রধান অবলম্বন
ছিল স্থানীয়
কিছু খেলাধুলা,
বিভিন্ন রকম
গান বাজনা
ইত্যাদি। কিন্তু বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় সিনেমা,
রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি
আবিষ্কারের ফলে
বিনোদন মাধ্যমের
ব্যাপক পরিবর্তন
হয়েছে। বিভিন্ন
ওয়েবসাইট (youtube.com, soundcloud.com) থেকে বিনামূল্যে
ভিডিও দেখা,
অডিও শুনা
বা ডাউনলোড
করা যায়।
এছাড়া কম্পিউটার
বা মোবাইল
ফোনে গেইম
খেলা বিনোদনের
অন্যতম মাধ্যম।
অনলাইনের মাধ্যমে
দূরবর্তী স্থানে
অবস্থান করেও
একাধিক খেলোয়ার
বিভিন্ন গেমস
খেলতে পারে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হলো
এমন একটি
প্ল্যাটফর্ম যেখানে
মানুষ কম্পিউটার,
স্মার্ট ফোন
ইত্যাদি যন্ত্রের
মাধ্যমে ইন্টারনেট
এর সাথে
সংযুক্ত হয়ে
ভার্চুয়াল কমিউনিটি
তৈরি করে
এবং ছবি,
ভিডিও সহ
বিভিন্ন তথ্য
শেয়ার করে।
অতীতে সামাজিক
যোগাযোগের প্রধান
মাধ্যম ছিল
চিঠি যার
কারনে বিশ্ব
সাহিত্যের বড়
একটা অংশ
দখল করে
আছে পত্র
সাহিত্য। কিন্তু
বর্তমানে সামাজিক
যোগাযোগের জন্য
বিশ্বগ্রামের নাগরিকরা
ব্যবহার করে
Facebook, Twitter বা এই
ধরণের ওয়েবসাইট বা
সোশ্যাল মিডিয়া।
বিশ্বগ্রাম নাগরিকের
বিনোদন ও
সামাজিক যোগাযোগের
প্রধান মাধ্যমই
হবে ইন্টারনেট
যুক্ত একটি
কম্পিউটার ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবিধাসমূহ–
১। সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে সবার
সাথে খুব
সহজেই সংযুক্ত
থাকা যায়।
২। সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে
সবাই নিজস্ব
অভিমত শেয়ার
করে থাকে
ফলে সমভাবাপন্ন
মানুষ খুজে
পাওয়া যায়।
৩। যেকোন
পন্য বা
সেবার প্রচারের
গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৪। দ্রুতগতিতে
তথ্যের বিস্তার
হয়ে থাকে।
৫। অপরাধী
সনাক্তকরণ ও
গ্রেফতার করতে
সহায়ক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অসুবিধাসমূহ–
১। মিথ্যা
বা ভিত্তিহীন
তথ্য প্রতিষ্ঠিত
হতে পারে।
২। পারস্পারিক
সম্পর্কের বিচ্ছেদ
হতে পারে।
৩। সাইবার
সন্ত্রাসি কার্জক্রম
হতে পারে।
৪। সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে
আসক্ত হওয়ার
সম্ভাবনা বেশি
থাকে।
সংবাদমাধ্যম:
তথ্য ও
যোগাযোগ প্রযুক্তির
কল্যাণে বিশ্বগ্রামের
যে কোন
জায়গায় ঘটে
যাওয়া ঘটনার
বিবরণ, ছবি অথবা ভিডিও
মুর্তেই ইন্টারনেটের
মাধ্যমে পাঠানো
যায় এমনকি
স্যাটেলাইট চ্যানেলের
মাধ্যমে সরাসরি
সম্প্রচার করা
যায়। এছাড়া
যে কোন
খবরের আপডেট
প্রতিনিয়ত নিউজ-পোর্টাল বা
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
পাওয়া যায়।
অর্থাৎ অতি
দ্রুততার সাথে
সংবাদ প্রচারের
কারণে মানুষের
জন্য তথ্য
পাওয়া সহজ
হয়েছে।
সাংস্কৃতিক বিনিময়ঃ
বিশ্বগ্রাম ব্যবস্থায় ভিন্ন
জাতি, বর্ণ, ধর্মের মানুষ
একটি একক
সমাজে বসবাস
করছে। ফলে
মানুষের যোগাযোগের
ব্যপকতা এবং
বিশ্বের সকল
সংস্কৃতির মানুষের সাথে পরিচিত
হওয়া সুযোগ
ঘটেছে। বিভিন্ন সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমের
সাহায্যে একে
অপরের সাথে
তথ্য বিনিময়
করার সুযোগ
পাচ্ছে। ফলে
ভিন্ন সংস্কৃতির
মানুষের মাঝে
সংস্কৃতি বিনিময়
ঘটছে। এর
ফলে বিভিন্ন
বিষয় সম্পর্কে
ভূল ধারণা
ও অন্ধবিশ্বাস
দূর হছে
এবং মানুষের
চিন্তা-চেতনার
পরিবর্তন হচ্ছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার | ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রভাব
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
ধারণা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
সিস্টেম তৈরির
উপাদানসমূহ বর্ণনা
করতে পারবে।
৩। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
প্রয়োগক্ষেত্র বা
ব্যবহার বর্ণনা
করতে পারবে।
৪। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
ইতিবাচক এবং
নেতিবাচক প্রভাব
বিশ্লেষণ করতে পারবে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী?
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
হলো কম্পিউটার সিমুলেশনের
সাহায্যে তৈরি ত্রিমাত্রিক পরিবেশ যা ব্যবহারকারীর কাছে
সত্য ও
বাস্তব বলে
মনে হয়। একে সিমুলেটেড পরিবেশও
বলা হয়।
কম্পিউটার প্রযুক্তি
ও অনুকরণবিদ্যার
প্রয়োগে কৃত্রিম
পরিবেশকে এমনভাবে
তৈরি ও
উপস্থাপন করা
হয়,যা
ব্যবহারকারীর কাছে
সত্য ও
বাস্তব বলে
মনে হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিহাস
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কত সালে আবিষ্কার হয়?
১৯৬২ সালে মর্টন এল হেলগি তাঁর তৈরি সেন্সোরামা স্টিমুলেটর নামক যন্ত্রের
মাধ্যমে প্রথম
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
আত্নপ্রকাশ করেন।
প্রথাগত ইউজার-ইন্টারফেসের বিপরীতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহারকারীকে একটি অভিজ্ঞতার ভিতরে রাখে। ব্যবহারকারী শুধুমাত্র স্ক্রিন দেখেন না বরং 3D-ওয়ার্ল্ডে নিমগ্ন এবং ইন্টারঅ্যাক্ট করতে সক্ষম হন। দৃষ্টি, শ্রবণশক্তি, স্পর্শ এমনকি গন্ধের মতো যথাসম্ভব ইন্দ্রিয়ের অনুকরণের মাধ্যমে কম্পিউটারটি এই কৃত্রিম বিশ্বে দারোয়ান হিসাবে রূপান্তরিত হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির বৈশিষ্ট্য সমূহ কী কী ?
·
এই কৃত্তিম পরিবেশে ত্রি-মাত্রিক ইমেজ তৈরি হয়
·
কৃত্তিম পরিবেশ হলেও অনুভূতি বাস্তবের মত
·
কম্পিউটার প্রযুক্তি ও অনুকরণবিদ্যার (Simulation) প্রয়োগ
·
ব্যবহৃত সফটওয়্যারগুলো – Vizard,
VRToolKit, 3d Studio Max, Maya ইত্যাদি
·
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য, ইন্টারেক্টিভ, কম্পিউটার-নিয়ন্ত্রিত, অন্বেষণযোগ্য এবং নিমগ্নযোগ্য হতে হবে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে বাস্তব অনুভব করার জন্য তথ্য আদান প্রদানকারী বিভিন্ন ধরণের ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। যেমন-
·
মাথায় হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে (Head Mounted
Display)
·
হাতে একটি ডেটা গ্লোভ (Data Glove),
·
শরীরে একটি পূর্ণাঙ্গ বডি স্যুট (Body Suit) ইত্যাদি পরিধান করতে হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির উপাদান গুলো কী কী ?
ইফেক্টর(Effector): ইফেক্টর হলো
বিশেষ ধরণের
ইন্টারফেস ডিভাইস
যা ভার্চুয়াল
রিয়েলিটি পরিবেশের
সাথে সংযোগ
সাধন করে।
যেমন- হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে,
ডেটা গ্লোভ,
পূর্ণাঙ্গ বডি
স্যুট ইত্যাদি।
রিয়েলিটি সিমুলেটর(Reality Simulator): এটি এক ধরণের
হার্ডওয়্যার যা
ইফেক্টরকে সংবেদনশীল
তথ্য সরবরাহ
করে। যেমন-
বিভিন্ন ধরণের
সেন্সর।
অ্যাপ্লিকেশন(Application): বিভিন্ন সিমুলেশন
সফটওয়্যার সমূহ।
যেমন- অটোডেস্কের “Division”।
জিওমেট্টি(Geometry): জিওমেট্রি হলো
ভার্চুয়াল পরিবেশের
বিভিন্ন বস্তুর
বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য
সম্পর্কিত তথ্যাবলী।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ব্যবহার
প্রকৌশল ও বিজ্ঞানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
বিজ্ঞানের জটিল
বিষয় নিয়ে
গবেষণা, গবেষণালব্ধ ফলাফল
বিশ্লেষণ ও
উপস্থাপন। বৈজ্ঞানিক
যন্ত্রপাতির ব্যবহার
এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল
প্রসেসের সিমুলেশনে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
ব্যপক প্রয়োগ
রয়েছে।
খেলাধুলা ও বিনোদন ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
কল্যাণে কম্পিউটারের
সাথে কোন
খেলায় অংশগ্রহন
বা কম্পিউটার
সিস্টেমে অনুশীলন
সহজ হচ্ছে।
দ্বিমাত্রিক বা
ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের
মাধ্যমে নির্মিত
হচ্ছে বৈজ্ঞানিক
কল্পকাহিনী নির্ভর
ছবি যা
সবার কাছে
জনপ্রিয়তা অর্জন
করেছে।
ব্যবসা ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
কোন পণ্য
উৎপাদনের পূর্বে
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে
পণ্যের মান
পরীক্ষা করা
যায়। ভার্চুয়াল
রিয়েলিটির মাধ্যমে
ভোক্তা বা
ক্রেতার কাছে
পণ্যের ব্যবহার
পদ্ধতি ও
অন্যান্য সুবিধাসমূহ
সহজে উপস্থাপন
করা যায়।
এছাড়া ব্যবসায়িক
কর্মচারীদের প্রশিক্ষণও
প্রদান।
শিক্ষাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
শিক্ষা গ্রহণ
ও প্রদানের
ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল
রিয়েলিটির অনেক
প্রভাব রয়েছে।
এর মাধ্যমে
শিক্ষার জটিল
বিষয়গুলো সহজে
উপস্থাপন এবং
পাঠদানের বিষয়টি
সহজে চিত্তাকর্ষক
ও হৃদয়গ্রাহী
করা যায়।
চিকিৎসাক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ব্যবহারের অন্যতম
বৃহৎ ক্ষেত্র
হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞান।
এই প্রযুক্তিতে
সিমুলেশনের মাধ্যমে
জটিল সার্জারি
অত্যন্ত সূক্ষভাবে
সম্পন্ন করা
সম্ভব হয়।
চিকিৎসকদের নতুন
চিকিৎসা সম্পর্কে
ধারণা অর্জন
বা প্রশিক্ষণের
ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল
রিয়েলিটি ব্যাপকভাবে
ব্যবহৃত হচ্ছে।
ড্রাইভিং নির্দেশনায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
মাধ্যমে গাড়ি
চালনার বিভিন্ন
বিষয়ে বাস্তব
ধারণা লাভ
করা যায়।
ফলে প্রশিক্ষণার্থী
দ্রুত গাড়ি
চালনা শিখতে
পারছে। এক্ষেত্রে
ঝুঁকির পরিমাণও
কমে যাচ্ছে।
সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রয়োগ করে
সেনাবাহিনীতে অস্ত্র
চালনা এবং
আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের
ব্যবহারে কম সময়ে নিখুঁতভাবে
প্রশিক্ষণ প্রদান
করা যায়।
বিমানবাহিনী প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রয়োগ করে
বিমানবাহিনীতে বিমান
চালনা প্রশিক্ষণ
এবং প্যারাস্যুট
ব্যবহারে প্রশিক্ষণ
প্রদান করা
যায়।
নৌবাহিনী প্রশিক্ষণে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
নৌবাহিনীতে যুদ্ধ
প্রশিক্ষণ এবং
ডুবোজাহাজ চালনা
প্রশিক্ষণে ব্যপকভাবে
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ব্যবহার করা
হয়।
মহাকাশ অভিযানে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রয়োগ করে
ত্রিমাত্রিক সিমুলেশনের
মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ছাত্র-শিক্ষকরা
সৌরজগৎ এর
গ্রহ বা
গ্রহাণুপুঞ্জের অবস্থান,
গঠনপ্রকৃতি ও
গতিবিধি, গ্রহের মধ্যস্থিত
বিভিন্ন বস্তু
বা প্রাণের
উপস্থিতি ইত্যাদি
সম্পর্কে সহজেই
ধারণা অর্জন
করতে পারে।
ইতিহাস ও ঐতিহ্য রক্ষায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
সাহায্যে যাদুঘরে ত্রিমাত্রিক
চিত্রের মাধ্যমে ইতিহাস-ঐতিহ্য
উপস্থাপন করা
যায়। ফলে
আগত দর্শণার্থীরা
তা দেখে
মুগ্ধ হয়
ও বিভিন্ন
বিষয় সম্পর্কে
বাস্তব ধারণা
লাভ করে
থাকে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির
প্রভাব
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির ইতিবাচক প্রভাব
১। শিক্ষা ও
প্রশিক্ষণ ক্ষেতে
জটিল বিষয়গুলো
ত্রিমাত্রিক চিত্রের
মাধ্যমে আকর্ষণীয়
ও হৃদয়গ্রাহী
করা যায়।
২। ঝুঁকিপূর্ণ উৎপাদন
ব্যবস্থায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
প্রয়োগ করে
পরীক্ষা-নিরীক্ষার
মাধ্যমে উৎপাদন ব্যবস্থা
সহজ ও
সরল করা
সম্ভব।
৩। বাস্তবায়নের পূর্বে
ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে
সিমুলেশনের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা
করে খরচ
কমানো যায়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব
১। বাস্তবের স্বাদ
পাওয়ায় কল্পনার
রাজ্যে বিচরন
করতে পারে।
২। যেহেতু ভার্চুয়াল
রিয়েলিটি একটি
কম্পিউটার সিস্টেম
তাই এটি
স্বাস্থ্যের জন্য
ক্ষতিকর।
৩। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
ব্যয়বহুল হওয়ায়
সবাই এই
প্রযুক্তি ব্যবহারে
সুবিধা পায়
না। ফলে
ডিজিটাল বৈষম্য
তৈরি হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা | রোবটিকস | রোবট | রোবটের ব্যবহার | রোবটের বৈশিষ্ট্য
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
২। বিভিন্ন এক্সপার্ট সিস্টেম
এবং তাদের
ব্যবহার ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৩। রোবটিকস
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
৪। একটি সাধারণ
রোবটের বিভিন্ন উপাদান গুলো বর্ননা
করতে পারবে।
৫। রোবটের বৈশিষ্ট্য
এবং এর
উল্লেখযোগ্য ব্যবহার
বর্ননা করতে
পারবে।
৬। এক্সপার্ট সিস্টেম
এবং রোবট এর
মধ্যে পার্থক্য
করতে পারবে।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা কী ?
আর্টিফিসিয়াল(Artificial) অর্থ হলো
কৃত্রিম এবং
ইনটেলিজেন্স(Intelligence) অর্থ হলো
বুদ্ধিমত্তা। অর্থাৎ
আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্স
মানে কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা।
মানুষ যেভাবে
চিন্তা-ভাবনা
করে সিদ্ধান্ত
নেয়, কৃত্তিম উপায়ে
কোন যন্ত্র যদি সেভাবে চিন্তা-ভাবনা করে
সিদ্ধান্ত নিতে
পারে, তখন সেই যন্ত্রের
বুদ্ধিমত্তাকে কৃত্তিম
বুদ্ধিমত্তা বলা
হয়। অন্যভবে বলা যায়- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হলো মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে মেশিনে সিমুলেশন করা যা মানুষের মত চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার জনক কে ?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার
জনক হলেন
বৃটিশ বিজ্ঞানী
ও গণিতবিদ
অ্যালান টুরিং(Alan
Mathison Turing)। ১৯৫০
সালে তার
আবিষ্কৃত “টুরিং টেস্ট”
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
ধারণার ভিত্তি
স্থাপন করে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শুধুমাত্র কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি অংশ নয় বরং এটি বিশাল একটি শাখা যেখানে আরও অনেক ফ্যাক্টর প্রয়োজন হয় এবং অবদান রাখে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করার জন্য প্রথমে আমাদের জানতে হবে বুদ্ধি কিসের সমন্বয়ে তৈরি। বুদ্ধি আমাদের মস্তিষ্কের একটি অপরিহার্য অংশ যা যুক্তি, শেখা, সমস্যা সমাধানের উপলব্ধি, ভাষা বোঝা ইত্যাদির সমন্বয়।
কোনও মেশিন
বা সফ্টওয়্যার
জন্য উপরোক্ত
বিষয়গুলো অর্জনের
জন্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার
নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর
প্রয়োজন:
·
গণিত
·
জীববিদ্যা
·
মনোবিজ্ঞান
·
সমাজবিজ্ঞান
·
কম্পিউটার বিজ্ঞান
·
নিউরন স্টাডি
·
পরিসংখ্যান
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে শেখা, যুক্তি এবং উপলব্ধি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আদর্শ বৈশিষ্ট্য হলো নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য যুক্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ সম্পাদন করা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন মেশিনগুলির উদাহরণের মধ্যে এমন কম্পিউটার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা দাবা এবং স্ব-ড্রাইভিং গাড়ি চালায়। দাবাতে, শেষ ফলাফলটি হলো খেলায় বিজয়। স্ব-ড্রাইভিং গাড়িগুলির জন্য, কম্পিউটার সিস্টেমটি অবশ্যই সমস্ত বাহ্যিক ডেটার হিসাব করে যাতে সংঘর্ষ এড়াতে পারে।
কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগক্ষেত্র বা ব্যবহার:
এক্সপার্ট সিস্টেম, রোবোটিক্স, নিউরাল নেটওয়ার্কস, ইমেজ প্রসেসিং, মেশিন লার্নিং, ফাজি লজিক, ন্যাচারাল ল্যাংগুয়েজ প্রসেসিং(NLP) ইত্যাদিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগ করা হয়।
এই সেক্টরগুলোতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা
প্রয়োগ করার
জন্য বিভিন্ন
ধরনের প্রোগ্রামিং
ভাষা যেমন-
LISP, CLISP, PROLOG, C/C++, JAVA ইত্যাদি ব্যবহার
করা হয়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শ্রেণিবিন্যাস
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দু’টি আলাদা বিভাগে ভাগ করা যায়: দুর্বল(Weak) এবং শক্তিশালী(Strong)।
দুর্বল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Weak artificial
intelligence): একটি নির্দিষ্ট
কাজ সম্পাদনের
জন্য ডিজাইন
করা একটি
সিস্টেমে দুর্বল
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
ব্যবহৃত হয়।
যেমনঃ ভিডিও
গেইম, দাবা, ব্যক্তিগত সহায়ক
যেমন- অ্যামাজনের অ্যালেক্সা(Alexa
) এবং অ্যাপলের
সিরি(Siri) ইত্যাদি।
শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Strong artificial intelligence): শক্তিশালী কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন
সিস্টেম হলো
এমন একটি
সিস্টেম যা
মানুষের ন্যায়
কাজগুলি পরিচালনা
করে। এ
সিস্টেমগুলো অধিক
জটিল সিস্টেম।
সিস্টেমগুলো এমনভাবে প্রোগ্রাম করা
হয় যাতে
কোনও ব্যক্তির
হস্তক্ষেপ ছাড়া
যেকোন সমস্যার
সমাধান করতে
পারে।
যেমনঃ স্ব-ড্রাইভিং গাড়িগুলিতে
বা হাসপাতালের
অপারেটিং রুমগুলিতে
এই ধরণের
সিস্টেমগুলো ব্যবহৃত
হয়।
এক্সপার্ট সিস্টেম কী ?
এক্সপার্ট সিস্টেম হলো কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন যা অসাধারণ মানব বুদ্ধির ন্যায় এবং দক্ষতার সাথে একটি নির্দিষ্ট জটিল সমস্যা সমাধানের জন্য তৈরি করা হয়।
অন্যভাবে বলা
যায়- এক্সপার্ট সিস্টেম
হলো কম্পিউটার
নিয়ন্ত্রিত এমন
একটি সিস্টেম
যা মানুষের
চিন্তা-ভাবনা
করার দক্ষতা
এবং সমস্যা
সমাধানের সক্ষমতাকে
একত্রে ধারণ
করে। এটি
মানব মস্তিস্কের
মত পারিপার্শ্বিক
পরিস্থিতি বিশ্লেষণ
করে সর্বোচ্চ
সাফল্য লাভের
উদ্দেশ্যে সিদ্ধান্ত
নিতে পারে।
এই সিস্টেমে
বিশাল তথ্য
ভাণ্ডার দিয়ে
সমৃদ্ধ থাকে,
যাকে নলেজবেজ
বলা হয়।
এই নলেজবেজে
যে কোন
নির্দিষ্ট বিষয়ের
উপর প্রশ্ন
করে উত্তর
জেনে নেওয়া
যায়।
এক্সপার্ট সিস্টেমের বৈশিষ্ট্য
·
উচ্চ পারদর্শিতা
·
বোধগম্য
·
নির্ভরযোগ্য
·
অত্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল
এক্সপার্ট সিস্টেমের উপাদান
·
নলেজবেজ
·
ইনফারেন্স ইঞ্জিন
·
ইউজার ইন্টারফেস
নলেজবেজঃ এতে নির্দিষ্ট এবং
উচ্চ মানের
জ্ঞান থাকে।
বুদ্ধি প্রদর্শনের
জন্য জ্ঞান
প্রয়োজন। যে
কোনও ES এর সাফল্য মূলত
অত্যন্ত নির্ভুল
এবং সুনির্দিষ্ট
জ্ঞান সংগ্রহের
উপর নির্ভর
করে।
ইনফারেন্স ইঞ্জিন: একটি সঠিক,
ত্রুটিবিহীন সমাধানের
জন্য, ইনফারেন্স ইঞ্জিন
সঠিক পদ্ধতি
এবং নিয়মের
ব্যবহার করে
থাকে। জ্ঞান-ভিত্তিক এক্সপার্ট
সিস্টেমের ক্ষেত্রে, একটি নির্দিষ্ট
সমাধানে পৌঁছানোর
জন্য ইনফারেন্স
ইঞ্জিন নলেজবেজ থেকে
জ্ঞান অর্জন
করে।
ইউজার ইন্টারফেসঃ ব্যবহারকারীরা ইউজার ইন্টারফেসের
সাহায্যে এক্সপার্ট সিস্টেমে
আন্তঃযোগাযোগ করে
থাকে। এক্ষেত্রে
ব্যবহারকারীকে কৃত্রিম
বুদ্ধিমত্তার বিশেষজ্ঞ
হতে হয়
না।
এক্সপার্ট সিস্টেম এর ব্যবহার
১। রোগীর রোগ
নিরাময়ে
২। বিভিন্ন ডিজাইনের
ভূল সংশোধনে।
৩। জেট বিমান
চালনায় ও
সিডিউল তৈরিতে।
৪। ভূগর্ভস্থ তেল
অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে
ইত্যাদি।
বর্তমানে ব্যবহৃত বিভিন্ন এক্সপার্ট সিস্টেমসমূহ এবং তাদের কাজঃ
Deep
blue: দাবা খেলার
বিচারক হিসেবে
কাজ করা।
Internist: চিকিৎসা পরামর্শ
প্রদান এবং
নির্ভূলভাবে জটিল
রোগের সার্জারি
করা।
Mycin
and Cadulus: চিকিৎসা পরামর্শ
প্রদান করা।
Mycsyma: গাণিতিক সমস্যা
সমাধান করা।
Dendral: প্রোগ্রামিং শেখানো।
Prospector: খনিজ পদার্থ
ও আকরিক
অনুসন্ধান করা।
রোবটিকস কী ?
প্রযুক্তির যে
শাখায় রোবটের
ডিজাইন, গঠন, পরিচালন ও
প্রয়োগক্ষেত্র সম্পর্কে
আলোচনা করা
হয়, সেই শাখাকে রোবটিকস
বলা হয়।
রোবট কী ?
রোবট হচ্ছে কম্পিউটার
নিয়ন্ত্রিত এক
ধরণের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যন্ত্র
যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে
বা কোন
ব্যক্তির নির্দেশে
কাজ করতে
পারে। এটি
তৈরী হয়েছে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার
নীতিতে যা
Computer program দ্বারা নিয়ন্ত্রিত
হয়। রোবট মানুষ কিংবা
বিভিন্ন বুদ্ধিমান
প্রাণীর মতো
কাজ করতে
পারে। এটি
মানুষ ও
মেশিন উভয়
কর্তৃক পরিচালিত
কিংবা দূর
নিয়ন্ত্রিত হতে
পারে। রোবটের
আকৃতি বিভিন্ন
ধরণের হতে
পারে। যে
রোবট দেখতে
মানুষের মত
তাকে বলা
হয় হিউমেনওয়েড।
রোবটের উপাদান
প্রসেসর (Processor) : রোবটের মূল
অংশ যেখানে
রোবটকে কেন্দ্রীয়ভাবে
নিয়ন্ত্রন করার
একটি প্রোগ্রাম
সংরক্ষিত থাকে।
প্রসেসরসমূহ প্রোগ্রামকে
রান করে
থাকে এবং
রোবটের সকল
কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ
করে।
পাওয়ার সিস্টেম (Power System): রোবটের যন্ত্রাংশগুলো
পরিচালনার জন্য
শক্তি প্রয়োজন
হয়, তাই সকল রোবটের
একটি পাওয়ার
সিস্টেম থাকে।
বর্তমানে লেড
এসিড ব্যাটারি
সর্বাধিক ব্যবহার
হয়ে থাকে
যা রিচার্জেবল।
ফলে পুনরায়
ব্যবহার করা
যায়। এছাড়া সৌর শক্তি, বৈদ্যুতিক জেনারেটর,
হাইড্রলিক সিস্টেম
প্রভৃতি রোবটের
শক্তির উৎস
হিসেবে ব্যবহৃত
হয়।
ইলেকট্রিক সার্কিট (Electric Circuit) : ইলেক্ট্রিক সার্কিট
বৈদ্যুতিক রোবটের
মোটরসমূহে বৈদ্যুতিক
সংযোগ প্রদান
করে। এছাড়া
হাইড্রোলিক ও
নিউমেট্রিক সিস্টেমের
রোবটকে নিয়ন্ত্রণকারী
সলেনয়েড বা
ভাল্বসমূহকেও বৈদ্যুতিক
সংযোগ প্রদান
করে।
অ্যাকচুয়েটর (Actuator) : রোবটের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নডাচড়া
করার জন্য
বৈদ্যুতিক মটরের
সমন্বয়ে তৈরি
বিশেষ ব্যবস্থা
হলো অ্যাকচুয়েটর।
এটি রোবটের
পেশিসদৃশ।
সেন্সর (Sensor): রোবটে প্রোগ্রামের
নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের
জন্য পারিপার্শিক
অবস্থা সম্পর্কে
তথ্য আহরণ
করার প্রয়োজন
হয়। এজন্য
ইনপুট যন্ত্র
হিসেবে রোবট
বিভিন্ন সেন্সর
ব্যবহার করে।
যার মাধ্যমে
পরিবেশ থেকে
বিভিন্ন বস্তুর
অবস্থান ও
প্রকৃতি সম্পর্কে
প্রসেসরকে তথ্য
সরবরাহ করে
থাকে।
মুভেবল বডি (Movable Body): রোবটে চাকা,
যান্ত্রিক পা
বা স্থানান্তর
করা যায়
এমন যন্ত্রপাতি।
যেমন- মটর।
ম্যানিপুলেটর (Manipulator) : রোবট তার
পারিপার্শের বিভিন্ন
বস্তুকে ম্যানিপুলেশন
অর্থাৎ কোন
বস্তু আকড়ে
ধরা, সরানো, সারিবদ্ধ করা
ইত্যাদি কাজের
জন্য যেসকল
অঙ্গ ব্যবহার
করে, তাকে ম্যানিপুলেটর
বলা হয়।
যেমন- গ্রিপার, এফেক্টর ইত্যাদি।
রোবটের বৈশিষ্ট্য
১। রোবট
সফটওয়্যার নিয়ন্ত্রিত
যা সুনির্দিষ্ট
কোন কাজ
দ্রুত ও
নিখুঁতভাবে সম্পন্ন
করতে পারে।
২। রোবট
পূর্ব থেকে
দেওয়া নির্দেশনা
অনুযায়ী কাজ
করে।
৩। রোবট
বিরতিহীনভাবে বা
ক্লান্তিহীনভাবে কাজ
করতে পারে।
৪। রোবট
যেকোনো ঝুঁকিপূর্ণ
বা অস্বাস্থ্যকর
স্থানে কাজ
করতে পারে।
৫। এটি
এক জায়গা
থেকে অন্য
জায়গায় ঘুরতে
বা স্থানান্তরিত
হতে পারে।
৬। দূর
থেকে লেজার
রশ্মি বা
রেডিও সিগন্যালের
সাহায্যে রোবট
নিয়ন্ত্রণ করা
যায়।
রোবটের ব্যবহার
১। রোবটকে
ব্যাপকভাবে ব্যবহার
করা হয়
কম্পিউটার-এইডেড
ম্যানুফেকচারিং এ,
বিশেষ করে
যানবাহন ও
গাড়ি তৈরির
কারখানায়।
২। যে
সমস্থ কাজ
করা স্বাভাবিকভাবে
মানুষের জন্য
বিপজ্জনক যেমন-
বিস্ফোরক নিস্ক্রিয়করণ,
ডুবে যাওয়া
জাহজের অনুসন্ধান,
খনি অভ্যন্তরের
কাজ ইত্যাদি
কঠোর শারীরিক
পরিশ্রমের বা
বিপদজ্জনক ও
জটিল কাজগুলো
রোবটের সাহায্যে
করা যায়।
৩। সামরিক ক্ষেত্রেও
রোবটের উল্লেখযোগ্য
ব্যবহার হচ্ছে
বোমা অনুসন্ধান
কিংবা ভূমি
মাইন সনাক্ত
করা।
৪। কারখানায়
কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত
রোবটের সাহায্যে
নানা রকম
বিপজ্জনক ও
পরিশ্রমসাধ্য কাজ
যেমন- ওয়েল্ডিং, ঢালাই ,ভারী মাল
উঠানো বা
নামানো, যন্ত্রাংশ সংযোজন
ইত্যাদির ক্ষেত্রে
রোবট বহুলভাবে
ব্যবহৃত হয়।
৫। চিকিৎসাক্ষেত্রে
জটিল অপারেশনে
ও নানা
ধরণের কাজে রোবট সার্জনদের সহায়তা
করে থাকে।
৬। মহাকাশ
গবেষণার ক্ষেত্রে
রোবটের গুরুত্বপূর্ণ
অবদান রয়েছে।
মহাকাশ অভিযানে
এখন মানুষের
পরিবর্তে বিভিন্ন
বৈশিষ্ট্য সম্বলিত
রোবট ব্যবহৃত
হচ্ছে।
ক্রায়োসার্জারি | ক্রায়োসার্জারির ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধা
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসা
পদ্ধতি ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। ক্রায়োসার্জারির সুবিধা ও
অসুবিধা বর্ণনা
করতে পারবে।
ক্রায়োসার্জারি কী ?
গ্রিক শব্দ
ক্রাউস(kruos) থেকে ক্রায়ো
(Cryo) শব্দটি এসেছে
যার অর্থ
বরফের মতো
ঠাণ্ডা এবং
‘সার্জারি’ অর্থ শৈল্য
চিকিৎসা। অর্থাৎ
ক্রায়োসার্জারি হলো
এক ধরণের
চিকিৎসা পদ্ধতি
যাতে অত্যধিক
শীতল তাপমাত্রা
প্রয়োগ করে
শরীরের অস্বাভাবিক
বা রোগাক্রান্ত
কোষগুলোকে ধ্বংস
করা হয়।
ক্রায়োসার্জারিকে অনেক
সময় ক্রায়োথেরাপি
বা ক্রায়োবায়োলেশনও
বলা হয়।
ক্রায়োজনিক এজেন্ট কী ?
এই পদ্ধতিতে
রোগাক্রান্ত অংশ
হিমায়িত করার
জন্য নিমোক্ত
ক্রায়োজনিক এজেন্ট
বা গ্যাসগুলো
ব্যবহার করা
হয়-
·
তরল নাইট্রোজেন
·
তরল আর্গন গ্যাস
·
তরল কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস
·
ডাই মিথাইল ইথাইল প্রোপ্রেন ইত্যাদি।
ক্রায়োপ্রোব বলতে কি বুঝায় ?
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
·
তরল নাইট্রোজেনকে স্প্রে করার জন্য ক্রয়োগান ব্যবহার করা হয়।
·
বহিরাগত টিউমারের ক্যানসার কোষে একটি সুচ, তুলা বা স্প্রেয়ার দিয়ে সরাসরি তরল নাইট্রোজেন প্রয়োগ করা হয়।
·
অভ্যন্তরীণ টিউমারের ক্ষেত্রে, ক্রয়োপ্রোব (Cryoprobe) নামক একটি ফাঁপা উপকরণ দিয়ে তরল নাইট্রোজেন বা ক্রায়োজনিক এজেন্ট টিউমারের সংস্পর্শে সঞ্চালন করা হয়। এ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা আলট্রাসাউন্ড বা এমআরআই (MRI) ব্যবহার করেন।
·
ক্রায়োপ্রোব টিউমারকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং জমাটবদ্ধ কোষ নিরীক্ষণ করতে যাতে চারপাশের সূক্ষ্ম টিস্যুগুলোর ক্ষতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা হয়।
ক্রায়োসার্জারি যেভাবে কাজ করে
এই পদ্ধতিতে
প্রথমে আলট্রা
সাউন্ড বা
এমআরআই(MRI) যন্ত্র ব্যবহার
করে রোগাক্রান্ত কোষ
বা টিস্যু
চিহ্নিত করা
হয়। তারপর
ক্রায়োপ্রোব বা
ইমেজিং যন্ত্রের
সাহায্যে রোগাক্রান্ত কোষে
বিভিন্ন ক্রায়োজনিক এজেন্ট
যেমন- তরল আর্গন গ্যাস
প্রয়োগ করা
হয়। ফলে
কোষের তাপমাত্রা
১০-১২
সেকেন্ডের মধ্যে
-১২০ থেকে
-১৬৫ ডিগ্রি
সেলসিয়াসে নেমে
আসে। তাপমাত্রা
অত্যাধিক হ্রাসের
কারণে কোষের
পানি জমাটবদ্ধ
হয়ে ঐ
টিস্যুটি বরফপিণ্ডে
পরিণত হয়।
বরফপিণ্ডে রক্ত
ও অক্সিজেন
সরবরাহ বন্ধের
কারণে টিস্যুটির
ক্ষয় সাধিত
হয়। পূনরায়
ইমেজিং যন্ত্রের
সাহায্যে কোষের
ভিতরে হিলিয়াম
গ্যাস নিঃসরণের
মাধ্যমে তাপমাত্রা
২০oc থেকে ৪০oc এ উঠানো হয়।
তখন জমাটবদ্ধ
কোষ বা
টিস্যুটির বরফ
গলে যায়
এবং কোষ
বা টিস্যুটি
ধ্বংস হয়ে
যায়।
ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার
·
ত্বকের ছোট টিউমার , তিল , আচিল , মেছতা , ত্বকের ক্যান্সার চিকিৎসায় ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয় ৷
·
ক্রায়োসার্জারি দ্বারা অভ্যন্তরীণ কিছু রোগ যেমন – যকৃত ক্যান্সার , প্রস্টেট ক্যান্সার , ফুসফুস ক্যান্সার , মুখের ক্যান্সার , গ্রীবাদেশীয় গোলযোগ , পাইলস ক্যান্সার , স্তন ক্যান্সার ইত্যাদির চিকিৎসাও করা হয় ৷
·
মানবদেহের কোষকলার কোমল অবস্থা Planter
Fasciitis এবং Fibroma ক্রায়োসার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয় ৷
ক্রায়োসার্জারির সুবিধা ও অসুবিধা
ক্রায়োসার্জারির সুবিধা
·
ক্রায়োসার্জারির সুবিধা হলো এটি বারবার করা সম্ভব।
·
এটি সাধারণ সার্জারির চেয়ে কম বেদনাদায়ক।
·
ক্রায়োসার্জারি অন্যান্য চিকিৎসার চেয়ে কম ব্যয়বহুল।
·
এই পদ্ধতিতে তাপমাত্রা যখন হিমাঙ্কের নিচে নামানো হয় তখন সংশ্লিষ্ট স্থান হতে রক্ত সরে যায় এবং রক্তনালিগুলো সংকুচিত হয় ফলে রক্তপাত হয় না বললেই চলে, হলেও খুব কম।
·
বহুল প্রচলিত কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি এবং বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের চেয়ে এই পদ্ধতির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম।
ক্রায়োসার্জারির অসুবিধা
·
এই পদ্ধতিতে রোগাক্রান্ত কোষ বা টিস্যু শনাক্ত করার সময় যদি সঠিকভাবে অবস্থান শনাক্ত করা না যায় এবং ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয় তাহলে সুস্থ কোষের ক্ষতি হতে পারে।
·
এর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, তবে আশার কথা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ক্ষণস্থায়ী।
·
ত্বকের ক্যান্সারের চিকিৎসায় ক্রায়োসার্জারির ফলে ত্বক ফুলে যায়, স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হয়, সংবেদনশীলতা হ্রাস পায়।
·
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তাদের ক্ষেত্রেই হয় যাদের প্রস্টেট গ্রন্থিগত সমস্যা রয়েছে।
বায়োমেট্রিক | বায়োমেট্রিক কত প্রকার | বায়োমেট্রিক এর ব্যবহার
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। বায়োমেট্রিক
প্রযুক্তি ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। বায়োমেট্রিক
সিস্টেম বাস্তবায়নের
উপাদান বর্ণনা
করতে পারবে।
৩। বায়োমেট্রিক
মেকানিজম ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৪। বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে
ব্যবহৃত মানুষের গঠনগত এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
৫। বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তির
প্রয়োগ ক্ষেত্র
বর্ণনা করতে পারবে।
বায়োমেট্রিক কী
?
গ্রীক শব্দ
“bio” যার অর্থ
Life বা প্রাণ
ও “metric” যার অর্থ পরিমাপ
করা। বায়োমেট্রিক
হলো বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটা পরিমাপ
এবং বিশ্লেষণ
করার প্রযুক্তি।
অর্থাৎ বায়োমেট্রিক
হলো এমন
একটি প্রযুক্তি
যেখানে কোন
ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে
অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত
বা সনাক্ত
করা হয়।
বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কি?
অন্য ভাবে বলা যায়, বায়োমেট্রিক সিস্টেম হলো এমন একটি প্রযুক্তি যা কোনও ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয়, আচরণগত বা উভয় বৈশিষ্ট্যকে ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে, এটি বিশ্লেষণ করে এবং প্রকৃত ব্যবহারকারী হিসাবে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।
প্রতিটি মানুষই
বৈশিষ্ট্যের দিক
দিয়ে স্বতন্ত্র,
এই বৈশিষ্ট্যগুলোই
প্রতিটি মানুষকে
এক অপর
থেকে আলাদা
করে তোলে।বায়োমেট্রিক সিস্টেমে ব্যক্তি
সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে
এই বৈশিষ্ট্যগুলো
বা বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটাগুলোকে মূলত
দুই ভাগে
ভাগ করা
হয়। যথাঃ
শারীরবৃত্তীয় (গঠনগত) বৈশিষ্ট্যঃ
১। ফেইস
(Face)
২। আইরিস
এবং রেটিনা
(Iris & Retina)
৩। ফিংগার
প্রিন্ট (Finger Print)
৪। হ্যান্ড
জিওমেট্রি ( Hand Geometry)
৫। ডি.এন.এ (DNA)
আচরণগত বৈশিষ্ট্যঃ
১। ভয়েস
(Voice)
২। সিগনেচার
(Signature)
৩। টাইপিং
কীস্ট্রোক ( Typing Keystroke)
বায়োমেট্রিক এর উপাদান
সাধারণত, একটি বায়োমেট্রিক্স সিস্টেমকে চারটি মূল উপাদানে বিভক্ত করা যায়। যেমন-
ইনপুট ইন্টারফেস (সেন্সর):
এটি বায়োমেট্রিক্স সিস্টেমের একটি সংবেদনশীল উপাদান যা মানুষের বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটাকে ডিজিটাল ডেটায় রূপান্তর করে।
উদাহরণ- বায়োলজিক্যাল(জৈবিক)
·
CMOS(
Metal Oxide Semiconductor) অথবা CCD (Charge Coupled Device) যা ফেইস রিকগনিশন, হ্যান্ড জিওমেট্রি, আইরিস/রেটিনা রিকগনিশন সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়।
·
অপটিক্যাল সেন্সর (optical
sensor) ফিঙ্গার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়।
·
মাইক্রোফোন ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়।
প্রসেসিং ইউনিট:
প্রসেসিং উপাদানটি
হলো একটি
মাইক্রোপ্রসেসর, ডিজিটাল সিগন্যাল
প্রসেসর(ডিএসপি),
বা কম্পিউটার
যা সেন্সর
থেকে নেওয়া
ডেটা প্রক্রিয়া
করে থাকে।
ডেটাবেজ:
ডেটাবেজটি নমুনা সংরক্ষণ
করে রাখে
যা পরবর্তীতে
ব্যক্তি সনাক্ত
করনের ব্যবহারকারীর
ডেটার সাথে
ম্যাচিং করে
সনাক্ত করা
হয়।
আউটপুট ইন্টারফেস:
আউটপুট ইন্টারফেস
বায়োমেট্রিক্স সিস্টেমের সিদ্ধান্ত এবং
ব্যবহারকারীর অ্যাক্সেস
প্রদান করে।
এটি হতে
পারে- TCP/IP প্রোটোকল, Radio Frequency
Identification (RFID), ব্লুটুথ বা
সেলুলার প্রোটোকলগুলোর
মধ্যে একটি।
বায়োমেট্রিক সিস্টেম কীভাবে কাজ করে?
বায়োমেট্রিক সিস্টেম সনাক্তকরণ এবং যাচাইকরণের জন্য চারটি সাধারণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে –
১। সেন্সর ব্যবহা র করে প্রার্থী বা ব্যবহারকারীর কাছ থেকে নমুনা গ্রহণ করে।
২। প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ব্যবহার করে নমুনা থেকে গুরুত্তপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো বের করে আনে।
৩। অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত নমুনার সাথে ইনপুটকৃত নমুনার তুলনা করে।
৪। প্রার্থী বা ব্যবহারকারী গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যান এর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করে।
অর্থাৎ বায়োমেট্রিক সিস্টেম সেন্সর ব্যবহার করে প্রার্থী বা ব্যবহারকারীর কাছ থেকে নমুনা গ্রহণ করে। প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট ব্যবহার করে নমুনা থেকে গুরুত্তপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলো বের করে আনে এবং অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত নমুনার সাথে তুলনা করে। যখন ইনপুট নমুনা ডেটাবেজের কোন একটি নমুনার সাথে মিলে তখন বায়োমেট্রিক সিস্টেম ব্যক্তিকে অ্যাক্সেস করতে দেয়; অন্যথায় প্রত্যাখ্যান করে।
বায়োমেট্রিক কত প্রকার ?
মানুষের জৈবিক
বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর
ভিত্তি করে
বায়োমেট্রিক্স সিস্টেমের
প্রকারভেদঃ
শারীরবৃত্তীয় সিস্টেম
(Physiological System):
১। ফিংগার
প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম
(Fingerprint Recognition system)
২। হ্যান্ড
জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম
(Hand Geometry Recognition system)
৩। ফেইস
রিকগনিশন সিস্টেম
(Facial Recognition System)
৪। আইরিস রিকগনিশন সিস্টেম
(Iris Recognition System)
৫। রেটিনা
স্ক্যানিং সিস্টেম
(Retinal Scanning System)
৬। ডি.এন.এ (DNA) রিকগনিশন সিস্টেম
(DNA Recognition System)
আচরণগত সিস্টেম (Behavioral System):
১। ভয়েস
রিকগনিশন সিস্টেম
(Voice Recognition System)
২। সিগনেচার
ভেরিফিকেশন সিস্টেম
(Signature Verification System)
৩। টাইপিং
কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেম
(Typing Keystroke Recognition System )
ফিংগার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম
(Fingerprint Recognition system)
এটি বায়োমেট্রিক
সিস্টেমে ব্যক্তি
সনাক্তকরণের জন্য
সর্বাধিক পরিচিত
এবং ব্যবহৃত
বায়োমেট্রিক সমাধান।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রাচীনতম
এবং সর্বাধিক
জনপ্রিয় রিকগনিশন
সিস্টেম।
প্রতিটি মানুষের
আঙ্গুলের ছাপ
বা ফিঙ্গার
প্রিন্ট পৃথক
যা পৃষ্ঠ,
খাঁজ এবং
রেখার দিক
এর সমন্বয়ে
গঠিত। পৃষ্ঠের
তিনটি মৌলিক
প্যাটার্ন রয়েছে
যথা: খিলান, লুপ এবং ঘূর্ণি
আকৃতির। এই
বৈশিষ্ট্যগুলির পাশাপাশি
বিভাজন এবং
দাগগুলি দ্বারা ফিঙ্গারপ্রিন্টের স্বতন্ত্রতা
নির্ধারিত হয়।
ফিঙ্গার প্রিন্ট
রিডার আলোক-সংবেদনশীল মাইক্রোচিপ
ব্যবহার করে
ফিঙ্গার প্রিন্টের
ডিজিটাল চিত্র
তৈরি করে।
তারপর কম্পিউটার
ফিঙ্গার প্রিন্টের
ডিজিটাল চিত্রটি
স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন
করে বিশ্লেষণ
করে এবং
প্যাটার্ন-ম্যাচিং
সফ্টওয়্যার ব্যবহার
করে ডেটাবেজে
সংরক্ষিত ফিঙ্গার
প্রিন্টের নমুনার
সাথে তুলনা
করে কোন
ব্যক্তিকে চিহ্নিত
করে।
ফিঙ্গার প্রিন্ট
রিডার এমন
একটি বায়োমেট্রিক
ডিভাইস যা
কোনও ফিঙ্গার
প্রিন্টকে ইনপুট
হিসাবে নেয়
এবং ডেটাবেজে
সংরক্ষিত ফিঙ্গার
প্রিন্টের নমুনার
সাথে তুলনা
করে।
সুবিধাঃ
১। খরচ তুলনামূলক কম।
২। সনাক্তকরণের জন্য সময় কম লাগে।
৩। এটি সবচেয়ে সমসাময়িক পদ্ধতি।
৪। এটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং সুরক্ষিত।
৫। এটি মেমোরির জায়গা কম নেয়।
অসুবিধাঃ
১। আঙ্গুলে
কোন প্রকার
আস্তর লাগানো
থাকলে সনাক্তকরণে
সমস্যা হয়।
২। ছোট
বাচ্চাদের জন্য
উপযুক্ত নয়।
ব্যবহারঃ
১। কোন
প্রোগ্রাম বা
ওয়েবসাইটে ইউজার
নেইম এবং
পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে
আঙ্গুলের ছাপ
ব্যবহার।
২। প্রবেশাধিকার
নিয়ন্ত্রণ ।
৩। ব্যাংকিং
পেমেন্ট সিস্টেমে।
৪। ডিএনএ
সনাক্ত করার
কাজে।
হ্যান্ড জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম (Hand
Geometry Recognition system)
প্রতিটি মানুষের
হাতের আকৃতি
ও জ্যামিতিক
গঠনেও ভিন্নতা
পরিলক্ষিত হয়।
বায়োমেট্রিক ডিভাইস
দ্বারা হ্যান্ড
জিওমিট্রি পদ্ধতিতে
মানুষের হাতের
আকৃতি বা
জ্যামিতিক গঠন
ও হাতের
সাইজ ইত্যাদি
নির্ণয়ের মাধ্যমে
মানুষকে সনাক্ত
করা হয়।
এই পদ্ধতিতে হ্যান্ড জিওমেট্রি রিডার হাতের
দৈর্ঘ্য ও
প্রস্থ, পুরুত্ত, পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল,
আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য
ও অবস্থান
এবং সামগ্রিকভাবে
হাড়ের কাঠামো
ইত্যাদি পরিমাপ
করে ডেটাবেজে
সংরক্ষিত হ্যান্ড
জিওমেট্রির নমুনার
সাথে তুলনা
করে ব্যক্তি
সনাক্ত করে
।
সুবিধাঃ
১। ব্যবহার
করা সহজ।
২। সিস্টেমে
অল্প মেমোরির
প্রয়োজন।
অসুবিধাঃ
১। ডিভাইস
গুলোর দাম
তুলনামূলক বেশি।
২। ফিংগার
প্রিন্ট এর
চেয়ে ফলাফলের
সূক্ষ্মতা কম।
ব্যবহারঃ
১। এয়ারপোর্টের
আগমন-নির্গমন
নিয়ন্ত্রণ ।
২। বিভিন্ন
প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবীদের
উপস্থিতি নির্ণয়ে।
৩। বিভিন্ন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
এবং লাইব্রেরিতে।
ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition System)
ফেইস রিকগনিশন সিস্টেমে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর মুখের চোয়াল ও চিবুকের আকার-আকৃতি, চোখের আকার ও অবস্থান, দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি তুলনা করার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়।
দ্বিমাত্রিক ফেসিয়াল স্ক্যানারগুলো মুখের জ্যামিতিক গঠন পড়ে এবং গ্রিডে রেকর্ড করা শুরু করে। মুখের জ্যামিতিক গঠনটি পয়েন্টে রপান্তরিত হয় যা অ্যালগরিদমের সাহায্যে ডেটাবেজে সংরক্ষিত নমুনার সাথে তুলনা করে ফলাফল দেয়।
সুবিধাঃ
১। ফেইস
রিকগনিশন সিস্টেম
সহজে ব্যবহারযোগ্য।
২। এই
পদ্ধতিতে সঠিক
ফলাফল পাওয়া
যায়।
অসুবিধাঃ
১। আলোর পার্থক্যের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
২। সময়ের সাথে সাথে মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তিত হয় ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়।
৩। স্বতন্ত্রতা গ্যারান্টিযুক্ত নয়, উদাহরণস্বরূপ, অভিন্ন যমজদের ক্ষেত্রে।
৪। কোন ব্যবহারকারীর মুখ যদি হালকা হাসির মতো বিভিন্ন ভাব প্রকাশ করে তবে ফলাফলটি প্রভাবিত করতে পারে।
ব্যবহারঃ
১। কোন
বিল্ডিং বা
কক্ষের প্রবেশদ্বারে।
২। কোন
আইডি নম্বর
সনাক্তকরণে ।
আইরিস রিকগনিশন সিস্টেম (Iris
Recognition System)
বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তিতে
ব্যক্তি সনাক্তকরনের
জন্য চোখের
আইরিসকে আদর্শ
অঙ্গ হিসেবে
বিবেচনা করা
হয়। আইরিস রিকগনিশন
সিস্টেমে মানুষের
চোখের আইরিস
প্যাটার্নের ভিত্তিতে
কাজ করে।
একজন ব্যক্তির
চোখের আইরিস
এর সাথে
অন্য ব্যক্তির
চোখের আইরিস
এর প্যাটার্ন
সবসময় ভিন্ন
হয়।
চোখের অক্ষিগোলকের
সামনের লেন্সের
ওপরে অবস্থিত
রঙিন পর্দাকে
আইরিশ বলে।
চোখের মাঝে
গাঢ় গোল
অংশটির নাম
পিউপিল বা
চোখের মণি।
এর চারপাশেই
আইরিশের অবস্থান।
এটি পিউপিলের
ছোট বা
বড় হওয়ার
আকার নিয়ন্ত্রণ
করে। চোখের
আইরিশ যখন
প্রসারিত হয়,
তখন পিউপিল
ছোট হয়ে
যায়। আবার
আইরিশ সংকুচিত
হলে পিউপিল
বড় হয়।
আইরিশ দেখতে
অনেকটা আংটির
মতো। এটি
বাদামি, সবুজ, নীল—বিভিন্ন রঙের
হয় এবং
আলোর তীব্রতার
ওপর নির্ভর
করে সংকুচিত
বা প্রসারিত
হয়। এতে
পিউপিলের আকার
পরিবর্তনসহ লেন্স
ও রেটিনায়
আপতিত আলোর
পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত
হয়।
আইরিস রিকগনিশন
সিস্টেমে চোখের
চারপার্শ্বে বেষ্টিত
রঙিন বলয়
বিশ্লেষণ ও
পরীক্ষা করা
হয়
সুবিধাঃ
১। এটি অত্যন্ত নির্ভুল কারণ দুটি আইরিস মিলের সম্ভাবনা ১0 বিলিয়ন লোকের মধ্যে ১ জন।
২। আইরিস প্যাটার্নটি কোনও ব্যক্তির জীবদ্দশায় একই থাকে বলে এটি অত্যন্ত আদর্শ।
৩। ব্যবহারকারীকে চশমা বা যোগাযোগের লেন্স অপসারণ করতে হবে না; কারণ তারা সিস্টেমের নির্ভুলতার বাধা দেয় না।
৪। এটি সিস্টেমের সাথে কোনও শারীরিক সংযোগ থাকে না।
৫। সনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।
৬। এতে ছোট আকারের টেম্পলেটের কারণে তাত্ক্ষণিক সনাক্তকরণ (২ থেকে ৫ সেকেন্ড) করতে পারে।
অসুবিধাঃ
১। আইরিস স্ক্যানার ব্যয়বহুল।
২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।
৩। কোন ব্যক্তির সঠিক স্ক্যান করার জন্য তার মাথাটি স্থির রাখতে হয়।
ব্যবহারঃ
১। এই
সিস্টেমটি পাসপোর্ট
ছাড়াই বিদেশে
যাওয়ার সুযোগ
দেয়।
২। এছাড়া
সরকারি গুরুত্বপূর্ণ
প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ
কাজে ব্যবহার
করা হয়।
৩। গুগল
তাদের ডেটা
সেন্টারে অ্যাক্সেসের
জন্য আইরিস
রিকগনিশন ব্যবহার
করে।
রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেম
(Retinal Scanning System)
রেটিনা হলো
চোখের বলের
পিছনের একটি
আস্তরণ স্তর
যা চোখের
বলের ভিতরের
পৃষ্ঠের 65% জুড়ে থাকে।
এটিতে আলোক
সংবেদনশীল কোষ
রয়েছে। রক্ত
সরবরাহকারী রক্তনালীগুলির
জটিল নেটওয়ার্কের
কারণে প্রতিটি
ব্যক্তির রেটিনা
ভিন্ন।
রেটিনা স্ক্যানিং
সিস্টেমে একজন
ব্যক্তিকে লেন্স
বা চশমা
অপসারণ করতে
বলা হয়।
10 থেকে 15 সেকেন্ডের জন্য
ব্যক্তির চোখের
মধ্যে একটি
নিম্ন-তীব্রতার
ইনফ্রারেডেরের আলোক
রশ্মি কাস্ট
করা হয়।
স্ক্যানের সময়
রক্তনালীগুলো এই
ইনফ্রারেড আলো
শোষণ করে
এবং একটি
প্যাটার্ন গঠন
করে ।
তারপর এই
প্যাটার্নটি ডিজিটাইজড
হয় এবং
ডেটাবেজে সংরক্ষিত
হয়।
রেটিনা স্ক্যানিং
সিস্টেম একটি
নির্ভরযোগ্য সিস্টেম,
কারণ ডায়াবেটিস,
গ্লুকোমা বা
কিছু ডিজঅর্ডার
জনিত রোগ
না থাকলে
রেটিনা প্যাটার্নটি
ব্যক্তির সারাজীবন
অপরিবর্তিত থাকে।
রেটিনা স্কান
পদ্ধতিতে চোখের
পিছনের অক্ষিপটের
মাপ ও
রক্তের লেয়ারের
পরিমাণ বিশ্লেষণ
ও পরিমাপ
করা হয়।
এই পদ্ধতিতে
চোখ ও
মাথাকে স্থির
করে একটি
ডিভাইসের সামনে
দাড়াতে হয়।
সুবিধাঃ
১। সনাক্তকরণে
খুবই কম
সময় লাগে।
২। সনাক্তকরণে
ফলাফলের সূক্ষ্মতা
তুলনামুলকভাবে অনেক
বেশি।
৩। এটি
একটি উচ্চ
নিরাপত্তামূলক সনাক্তকরণ
ব্যবস্থা যা
স্থায়ী।
অসুবিধাঃ
১। এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।
৩। ডিভাইস ব্যবহারের সময় চশমা খোলার প্রয়োজন হয়।
৪। কোন ব্যক্তির সঠিক স্ক্যান করার জন্য তার মাথাটি স্থির রাখতে হয়।
ব্যবহারঃ
১। এই
পদ্ধতির প্রয়োগে
পাসপোর্টবিহীন এক
দেশের সীমা
অতিক্রম করে
অন্য দেশে
গমন করা
যেতে পারে
যা বর্তমানে
ইউরোপে ব্যবহৃত
হচ্ছে।
২। এছাড়া
সরকারি গুরুত্বপূর্ণ
প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান
ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ
কাজে ব্যবহার
করা হয়।
ডি.এন.এ (DNA) রিকগনিশন সিস্টেম (DNA
Recognition System)
ডিওক্সিরাইবো নিউক্লিক
এসিড (ডিএনএ) হলো জিনগত উপাদান
যা কোষের
নিউক্লিয়াসে অবস্থিত।
প্রতিটি মানুষ
তার ডিএনএতে
পাওয়া বৈশিষ্ট্যগুলো
দ্বারা চিহ্নিত
করা যায়।
ডিএনএ যে
কোনও সংখ্যক
উত্স থেকে
সংগ্রহ করা
যেতে পারে।
যেমন- রক্ত, চুল, আঙুলের নখ,
মুখের ত্বক,
রক্তের দাগ,
লালা এবং
একবার বা
দুবার ব্যবহার
করা যেকোন
জিনিস থেকে
ডিএনএ সংগ্রহ
করা যায়।
ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের
এর সাহায্যে
ব্যক্তি সনাক্তকরণের
বিষয়টি অনেক
বেশি বিজ্ঞান
সম্মত। কোন
মানুষের দেহ
কোষ থেকে
ডিএনএ আহরণ
করার পর
তার সাহায্যেই
কতিপয় পর্যায়ক্রমিক
ধাপ অনুসারে
ঐ মানুষের
ডিএনএ প্রোফাইল
করতে হয়।
ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের
মৌলিক ধাপগুলো
হলো-
১। রক্ত,
লালা, চুল ইত্যাদি থেকে
অর্জিত নমুনা
থেকে ডিএনএ
পৃথক করা।
২। ডিএনএ
নমুনাকে ছোট
ছোট সেগমেন্টে
ভাগ করা।
৩। আকার
অনুযায়ী ডিএনএ
সেগমেন্টেগুলোকে সংগঠিত
করা।
৪। বিভিন্ন
নমুনা থেকে
ডিএনএ সেগমেন্টেগুলোকে
তুলনা করা।
সুবিধাঃ
১। পদ্ধতিগত
কোন ভূল
না থাকলে
সনাক্তকরণে সফলতার
পরিমাণ প্রায়
শতভাগ।
অসুবিধাঃ
১। ডিএনএ
ফিংগার প্রিন্টিং
তৈরি ও
সনাক্তকরণের জন্য
কিছু সময়
লাগে।
২। ডিএনএ
প্রোফাইলিং করার
সময় পদ্ধতিগত
ভূল ডিএনএ
ফিংগার প্রিন্টিং
এর ভূলের
সম্ভাবনা বাড়িয়ে
দেয়।
৩। সহোদর
যমজদের ক্ষেত্রে
ডিএনএ ফিংগার
প্রিন্টিং সম্পূর্ণ
এক হয়।
৪। তুলনামূলক
খরচ বেশি।
ব্যবহারঃ
১। অপরাধী
সনাক্তকরণে
২। পিতৃত্ব
নির্ণয়ে
৩। বিকৃত
শবদেহ শনাক্তকরণে
৪। লুপ্তপ্রায়
প্রাণীদের বংশ
বৃদ্ধির জন্য
৫। চিকিৎসা
বিজ্ঞানে
ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম (Voice
Recognition System)
ভয়েস এবং স্পিচ রিকগনিশন দুটি পৃথক বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যা মানুষের কণ্ঠের উপর নির্ভরশীল। উভয়ই যোগাযোগহীন, সফ্টওয়্যার ভিত্তিক প্রযুক্তি।
ভয়েস রিকগনিশন, সাধারণত ভয়েসপ্রিন্ট হিসাবেও উল্লেখ করা হয়, এটি ভোকালের সাহায্যে ব্যক্তি সনাক্তকরণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।
ভয়েস রিকগনিশন
পদ্ধতিতে সকল
ব্যবহারকারীর কন্ঠকে,
সফটওয়্যারের সাহায্যে
ইলেক্ট্রিক সিগন্যালে
রুপান্তর করে
প্রথমে ডেটাবেজে
সংরক্ষণ করতে
হয় এবং
একজন ব্যবহারকারীর
কণ্ঠকে ডেটাবেজে
সংরক্ষিত ভয়েস
ডেটা ফাইলের
সাথে তুলনা
করে কোন
ব্যক্তিকে শনাক্ত
করা হয়।
সুবিধাঃ
১। সহজ
ও কম
খরচে বাস্তবায়নযোগ্য
সনাক্তকরণ পদ্ধতি।
অসুবিধাঃ
১। অসুস্থতা
জনিত কারনে
কোন ব্যবহারকারীর
কন্ঠ পরিবর্তন
হলে সেক্ষেত্রে
অনেক সময়
সঠিক ফলাফল
পাওয়া যায়
না।
২। সূক্ষ্মতা
তুলনামূলকভাবে কম।
ব্যবহারঃ
১। অনেক
আর্থিক প্রতিষ্ঠান
এই পদ্ধতি
ব্যবহার করে
থাকে।
২। টেলিফোনের
মাধ্যমে লেনদেনের
ক্ষেত্রে ভয়েস
রিকোগনিশন সিস্টেম
গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে।
৩। টেলিকমিউনিকেশন
সিস্টেমের নিরাপত্তায়।
সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Signature
Verification System)
সিগনেচার ভেরিফিকেশন
পদ্ধতিতে হাতে
লেখা স্বাক্ষরকে
পরীক্ষা করা
হয়। এই
পদ্ধতিতে স্বাক্ষরের
আকার, লেখার গতি,
লেখার সময়
এবং কলমের
চাপকে পরীক্ষা
করে ব্যবহারকারীর
স্বাক্ষর সনাক্ত
করা হয়।
একটি স্বাক্ষরের
সকল প্যারামিটার
ডুপ্লিকেট করা
সম্ভব নয়।
এই পদ্ধতিতে
ব্যবহার করা
হয় বিশেষ
ধরণের একটি
কলম এবং
প্যাড বা
টেবলেট পিসি
।
সুবিধাঃ
১। ইহা
একটি সর্বস্থরের
গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।
২। এই
পদ্ধতি ব্যবহারে
খরচ কম।
৩। সনাক্তকরণে
কম সময়
লাগে।
অসুবিধাঃ
১। যারা
স্বাক্ষর জানে
না তাদের
জন্য এই
পদ্ধতি ব্যবহার
করা যায়
না।
ব্যবহারঃ
১। ব্যাংক-বীমা এবং
অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে
স্বাক্ষর সনাক্তকরণের
কাজে এই
পদ্ধতি ব্যবহার
হয়ে থাকে।
টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেম
(Typing Keystroke Recognition System )
টাইপিং কীস্ট্রোক
রিকগনিশন সিস্টেমে
ব্যবহারকারীর টাইপিং
ধরণ, ছন্দ এবং
কীবোর্ডে টাইপের
গতি বিশ্লেষণ
করে ব্যক্তি
সনাক্ত করা
হয়। কীস্ট্রোক
রিকগনিশন সিস্টেমে
dwell time এবং flight time ব্যবহৃত হয়।
dwell time – যতক্ষণ সময়
কী(KEY) টি চাপ দেওয়া
হয়
flight time – একটি কী
ছেড়ে দেওয়া
এবং পরবর্তী
কী চাপ
দেওয়ার মধ্যবর্তী
সময়
বায়োমেট্রিক এর ব্যবহার / বায়োমেট্রিক কোথায় ব্যবহৃত হয় ?
১। কোন
কক্ষ, প্রোগ্রাম বা
সফটওয়্যার ও
যেকোন ডিজিটাল
সিস্টেম এর
প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ
২। কোন
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা
ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের
কর্মকর্তা ও
কর্মচারীর উপস্থিতি
রেকর্ড করতে।
৩। পাসপোর্ট
তৈরি
৪। ড্রাইভিং
লাইসেন্স তৈরি
৫। ব্যাংকের
লেনদেনের নিরাপত্তায়
৬। ATM বুথের নিরাপত্তায়
বায়োমেট্রিক এর সুবিধা
·
পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়া বা চুরি হওয়ার কোন সমস্যা নেই
·
ইতিবাচক এবং নির্ভুল সনাক্তকরণ
·
সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
·
নিরাপদ এবং ব্যবহার বান্ধব
বায়োইনফরমেটিক্স | এর ব্যবহার, সুবিধা ও অসুবিধা
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। বায়োইনফরমেটিক্সের ধারণা ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। বায়োইনফরমেটিক্সের ব্যবহার বা
প্রয়োগ ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
বায়োইনফরমেটিক্স কী ?
বায়োইনফরমেটিক্স হলো
একটি আন্তঃশাস্ত্রীয়
ক্ষেত্র যা
অধিক এবং
জটিল বায়োলজিক্যাল
(জৈবিক) ডেটাসমূহ বিশ্লেষণ
করার জন্য
বিভিন্ন পদ্ধতি
এবং সফ্টওয়্যার
বা টুলস
তৈরি করে। বায়োইনফরমেটিক্স বিজ্ঞানের
এমন একটি
আন্তঃশাস্ত্রীয় ক্ষেত্র,
যেখানে কম্পিউটার
বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, গণিত এবং
ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞানকে
ব্যবহার করে
বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল
(জৈবিক) ডেটাসমূহ বিশ্লেষণ
এবং ব্যাখ্যা
করা হয়।
অন্যভাবে বলা
যায়- কম্পিউটার বিজ্ঞান,
পরিসংখ্যান, গণিত এবং
ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞানকে
ব্যবহার করে
জৈবিক সমস্যা
সমাধানের বিজ্ঞান
হলো বায়োইনফরমেটিক্স।
বায়োইনফরমেটিক্স এর প্রধান কাজ কী?
বিভিন্ন জৈবিক
বিশ্লেষণের ফলে
অধিক পরিমাণে
ডেটা পাওয়া
যায় এবং
এই ডেটাগুলো
ম্যানুয়ালি বিশ্লেষণ
করা খুব
কঠিন হয়ে
যায়। এক্ষেত্রে
স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াগুলোর
মাধ্যমে সঠিক
এবং দক্ষতার
সাথে জৈবিক
ডেটাগুলো বিশ্লেষণ
করতে বিভিন্ন
গাণিতিক কৌশল
ব্যবহার করা
হয়। সুতরাং,
বায়োইনফরমেটিক্স, জীববিজ্ঞান এবং
চিকিৎসা বিজ্ঞানের
সমস্যা সমাধানের
জন্য ডেটা
সায়েন্সের ক্ষেত্র
হিসাবে বিবেচিত
হতে পারে।বায়োইনফরমেটিক্সে জীন তথা
DNA সংক্রান্ত গবেষণার
মাধ্যমে প্রাপ্ত
ডেটাগুলো ডেটাবেজে
সংরক্ষণ করা
হয়। পরবর্তিতে কম্পিউটার বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, গণিত এবং ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞানকে ব্যবহার করে
এই ডেটাগুলো বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল
সমস্যার সমাধান
এবং নতুন
টুলস তৈরি
করা হয়।
বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত
জৈবিক ডেটাসমূহ
·
ডিএনএ
·
জিন
·
এমিনো অ্যাসিড
·
নিউক্লিক অ্যাসিড ইত্যাদি
বায়োইনফরমেটিক্স এর জনক কে?
স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির
কম্পিউটার বিজ্ঞানী
ডোনাল্ড নুথ
(Donald Knuth) সর্বপ্রথম বায়োইনফরমেটিক্সের ধারণা
দেন।
বায়োইনফরমেটিক্স এর উদ্দেশ্য
১। প্যাটার্ন
রিকগনিশন, ডেটা মাইনিং, ভিজুয়ালাইজেশন ইত্যাদির
সাহায্যে জৈবিক
প্রক্রিয়া সঠিকভাবে
অনুধাবন করা।
অর্থাৎ জীন
বিষয়ক তথ্যানুসন্ধান
করে জ্ঞান
তৈরি করা।
২। রোগ-বালাইয়ের কারণ
হিসেবে জীনের
প্রভাব সম্পর্কিত
জ্ঞান আহরণ
করা।
৩। ঔষধের
গুণাগুণ উন্নত
ও নতুন
ঔষধ আবিষ্কারের
প্রচেষ্টা করা।
HSC ICT প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ
·
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস
একটি বায়োইনফরমেটিক্স টুলস তিনটি প্রধান কাজ করে থাকে:
বায়োইনফরমেটিক্সে যে
কোন জৈবিক
ডেটা বিশ্লেষণ
করার ক্ষেত্রে
একটি বায়োইনফরমেটিক্স টুলস নিমোক্ত তিনটি প্রধান কাজ করে থাকে-
১। ডিএনএ(DNA)
সিকোয়েন্স থেকে
প্রোটিন সিকোয়েন্স
নির্ণয় করা
২। প্রোটিন
সিকোয়েন্স থেকে
প্রোটিন স্ট্রাকচার
নির্ণয় করা
৩। প্রোটিন
স্ট্রাকচার থেকে
প্রোটিনের কাজ
নির্ণয় করা
বায়োইনফরমেটিক্স এর ব্যবহার
·
Microbial
Genome (জিনোম সমাগম)
·
Molecular
Medicine (মলিকুলার মেডিসিন)
·
Personalized
Medicine (পার্সোনালাইজড মেডিসিন)
·
Preventive
Medicine (প্রিভেন্টিভ মেডিসিন)
·
Gene
Therapy (জিন থেরাপি)
·
Comparative
studies (বিবর্তন শিক্ষা)
·
Climate
Change studies ( আবহাওয়া পরিবর্তন শিক্ষা)
·
Biotechnology
(বায়োটেকনোলজি)
·
Drug
Development (ওষুধ উন্নয়ন)
·
Veterinary
Science (ভেটেনারি বিজ্ঞান)
·
Agriculture
(কৃষি)
·
Bio-weapon
development (বায়ো-অস্ত্র উন্নয়ন)
বায়োইনফরমেটিক্স এর গবেষণাধীন ক্ষেত্রসমূহ
·
Sequence
alignment (সিকুয়েন্স এলাইনমেন্ট)
·
DNA
Analysis (ডিএনএ বিশ্লেষণ)
·
Gene
Finding (জিন ফাইন্ডিং)
·
Drug
Design (ড্রাগ নকশা)
·
Drug
Invention (ড্রাগ আবিস্কার)
·
Protein
Structure (প্রোটিনের গঠন)
বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত ওপেনসোর্স সফটওয়্যারসমূহ
·
Bioconductor
·
BioPerl
·
BioJS
·
Biopython
·
BioJava
·
BioRuby
·
Biclipse
·
EMBOSS
·
Taverna
Workbench
·
UGENE
·
T
Bio
·
Orange
বায়োইনফরমেটিক্সে ব্যবহৃত এড-অন(add-on) সমূহ
·
Apache
Taverna
·
UGENE
·
GenoCAD
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং | এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। জেনেটিক
ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। জেনেটিক
ইঞ্জিনিয়ারিং এর
ব্যবহার বা
প্রয়োগ ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং কী ?
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
হলো বিভিন্ন
প্রযুক্তির সমন্বয়
যার সাহায্যে
কোষের জেনেটিক
কাঠামো পরিবর্তন
করে নতুন
বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উন্নত বা অভিনব জীব উত্পাদন করা হয়।
জীব অর্থাৎ
প্রাণী বা
উদ্ভিদের ক্ষুদ্রতম
একক হলো
কোষ। কোষের
প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস
বলা হয়।
নিউক্লিয়াসের ভিতরে
বিশেষ কিছু
পেঁচানো বস্তু
থাকে যাকে
ক্রোমোজোম বলা
হয়। ক্রোমোজোমের
মধ্যে আবার
চেইনের মত
পেঁচান কিছু
বস্তু থাকে
যাকে DNA(Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। এই
DNA অনেক অংশে
ভাগ করা
থাকে। এক
একটি নির্দিষ্ট
অংশকে জীন
বলা হয়।
এই জীন
প্রাণী বা
উদ্ভিদের বিভিন্ন
বৈশিষ্ট্য বহন
করে থাকে।
অর্থাৎ প্রাণী
বা উদ্ভিদের
বিকাশ কীভাবে
হবে, আকৃতি কীরুপ
হবে তা
কোষের DNA সিকোয়েন্সে সংরক্ষিত
থাকে।
যেমনঃ ধরা
যাক একটি
আমের জাত
উচ্চফলনশীল কিন্তু
স্বাদে মিষ্টি
কম। অপরদিকে
অপর একটি
আমের জাত
কমফলনশীল কিন্তু
স্বাদে অনেক
মিষ্টি। এক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
এর সাহায্যে উচ্চফলনশীল আমের
জিনের সাথে
মিষ্টি আমের
জিনের সংমিশ্রণে
নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উচ্চফলনশীল ও
মিষ্টি আম
উৎপন্ন করা
যায়।
অন্য ভাবে
বলা যায়,
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
হলো এমন
একটি প্রক্রিয়া
যা ডিএনএ
অপসারণ বা
প্রবর্তন করে
কোনও জীবের
জিনগত কাঠামোর
পরিবর্তন করে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
একটি জীব
থেকে সরাসরি
জিন নিয়ে
অন্যটিতে স্থাপন
করে। এটি
অনেক দ্রুত,
কোনও জীব
থেকে কোনও
জিন নিয়ে
অন্যটিতে স্থাপন
করতে ব্যবহৃত
হয় এবং
অন্যান্য অপ্রত্যাশিত
জিনগুলি যুক্ত
হতে বাধা
দেয়।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর অপর নাম কী?
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, যাকে জেনেটিক মডিফিকেশন বা জেনেটিক ম্যানিপুলেশন বলা হয়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ বায়োটেকনোলজি ব্যবহার করে কোনও জীবের জিনের সরাসরি ম্যানিপুলেশন বা পরিবর্তন করা হয়।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং
এর জন্য
যে পদ্ধতি
প্রয়োগ করা
হয় তাকে
রিকম্বিনেন্ট DNA (DeoxyriboNucleic Acid) – প্রযুক্তি বা
জিন ক্লোনিং
বলা হয়।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক কে?
১৯৭২ সালে
Paul Berg বানরের ভাইরাস
SV40 ও lambda virus এর DNA এর সংযোগ
ঘটিয়ে বিশ্বের
প্রথম রিকম্বিনেন্ট
ডিএনএ অণু
তৈরি করেন।
এই জন্য Paul
Berg কে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর
জনক বলা
হয়।
রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহ
১। DNA নির্বাচন
২। DNA এর বাহক নির্বাচন
৩। DNA খণ্ড কর্তন
৪। খণ্ডনকৃত
DNA প্রতিস্থাপন
৫। পোষকদেহে
রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর
৬। রিকম্বিনেন্ট
DNA এর সংখ্যা
বৃদ্ধি এবং
মূল্যায়ন।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং যেভাবে কাজ করে
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করার জন্য ইনসুলিনের একটি উদাহরণ দেখা যাক, যা আমাদের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে-
·
সাধারণত অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উত্পাদিত হয়, তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন উত্পাদন নিয়ে সমস্যা হয়।
·
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ইনসুলিন ইনজেকশন করতে হয়।
·
তো, পূর্বে রোগীদের জন্য এই ইনসুলিন সরবরাহ করা হতো শূকর থেকে। শূকর হত্যা করে ইনসুলিন সংগ্রহ করতে হতো।
·
এরপর রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু হয়।
·
এক্ষেত্রে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে কম খরচে অধিক পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন সম্ভব হয়।
·
এই প্রক্রিয়ায়, মানুষের শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকারী জিনটি এনজাইম দ্বারা কর্তন করে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএতে স্থাপন করা হয় এবং ল্যাবরেটরিতে ইলোকাই ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার করানো হয়। ওই ট্রান্সজেনিক ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াগুলোই ইনসুলিন উৎপাদন করে।
HSC ICT প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ
·
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিকস
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা
এই প্রযুক্তি
বাংলাদেশে সবচেয়ে
বেশি ব্যবহৃত
হয় কৃষি
খাতে। কৃষি
গবেষণায় এই
প্রযুক্তি ব্যবহার
করে এই
পর্যন্ত অনেক ট্রান্সজেনিক ফসল
আবিষ্কার করা
হয়েছে। তার
মধ্যে উন্নত
প্রজাতির ধান
উল্লেখযোগ্য। এই
প্রযুক্তির সুষ্ঠ
ব্যবহারের মাধ্যমে
দেশের খাদ্য
সমস্যা অনেকটা
দূর করা
সম্ভব। এছাড়া
নিম্ল লিখিত
কাজে ব্যবপভাবে
ব্যবহৃত হয়ে
থাকে। যথাঃ
১। শস্যের
গুণাগুণ মান
বৃদ্ধি করা
২। শস্য
থেকে সম্পূর্ণ
নতুন উপাদান
উৎপাদন করা
৩। পরিবেশের
বিভিন্ন ধরণের
হুমকি থেকে
শস্যকে রক্ষা
করা
৪। শস্যের
বৃদ্ধি ত্বরান্বিত
করা ও
রোগ প্রতিরোধ
ক্ষমতা বাড়ানো
এছাড় উন্নতমানের
ফসল উৎপাদন,
গৃহপালিত পশু
উৎপাদন, রোগের চিকিৎসা,
হরমোন তৈরি,
ভাইরাসনাশক, মৎস্য উন্নয়ন,
ফারমাসিউটিক্যাল পণ্য
উৎপাদন, টিকা ও
জ্বালানি তৈরি,
জেনেটিক ত্রুটিসমূহ
নির্ণয়, পরিবেশ সুরক্ষা
ইত্যাদি ক্ষেত্রে।
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষতিকর দিকগুলো
১। রিকম্বিনেন্ট
ডিএনএ যদি কোন কারণে
ক্ষতিকর হয়ে
পড়ে তাহলে
এর প্রভাবে
জীব জগতে
বিপর্যয় নেমে
আসবে।
২। নিবেশিত
জিন যদি
ক্ষতিকর প্রোটিন
সংশ্লেষণ করে
তাহলে ক্যান্সার
সহ নতুন
রোগ হতে
পারে।
ন্যানো টেকনোলজি | ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার | সুবিধা ও অসুবিধা
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। ন্যানো
টেকনোলজি ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
২। ন্যানো
টেকনোলজির ব্যবহার
বর্ণনা করতে
পারবে।
৩। ন্যানো
টেকনোলজির সুবিধা
ও অসুবিধা
বিশ্লেষণ করতে
পারবে।
৪। ন্যানো
টেকনোলজি কিভাবে
আমাদের উপকারে
আসে তা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
ন্যানো টেকনোলজি কী ? ন্যানো প্রযুক্তি কী?
“পারমাণবিক বা আণবিক স্কেলে অতিক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য ধাতব বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিকে ন্যানো প্রযুক্তি বা টেকনোলজি বলে।“
ন্যানো টেকনোলজির জনক কে ?
১৯৫৯ সালে
আমেরিকান বিখ্যাত
পদার্থবিদ রিচার্ড
ফাইনম্যান (Richard Feynman) তার “There’s Plenty of Room at the Bottom ” আলোচনায় প্রথম
ন্যানো টেকনোলজির
ধারণা বর্ননা
করেছিলেন। যেখানে
তিনি পরমাণুর
প্রত্যক্ষ ম্যানিপুলেশনের
মাধ্যমে সংশ্লেষণের
সম্ভাবনা বর্ণনা
করেছিলেন।
রিচার্ড ফাইনম্যান
(Richard Feynman) কে ন্যানো
প্রযুক্তির জনক
বলা হয়।
ন্যানো কী ?
ন্যানো(Nano) শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ থেকে
এসেছে যার
আভিধানিক অর্থ
dwarft ( বামন বা
জাদুকরী ক্ষমতাসম্পন্ন
ক্ষুদ্রাকৃতির মানুষ)।
ন্যানো হলো
একটি পরিমাপের
একক। এটি কতটা ছোট তা কল্পনা করা কঠিন। ১ মিটারের ১০০
কোটি ভাগের
এক ভাগকে
বলা হয়
১ ন্যানো
মিটার। অর্থাৎ 1 nm = 10-9 m।
·
আর এই
ন্যানোমিটার (1 থেকে 100 ন্যানোমিটার) স্কেলে যে
সমস্ত টেকনোলজি
সম্পর্কিত সেগুলোকেই
ন্যানো টেকনোলজি
বলে।
·
অন্যভাবে বলা
যায়- ন্যানো টেকনোলজি
হলো এমন
একটি বিজ্ঞান,
প্রকৌশল এবং
প্রযুক্তি যা
সাধারণত ১ থেকে ১00
ন্যানোমিটার স্কেলে পরিচালিত হয়ে
থাকে।
ন্যানো টেকনোলজিতে দুটি প্রধান পদ্ধতি
ন্যানো টেকনোলজিতে দুটি প্রধান পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। একটি হলো “bottom-up” বা নিচ থেকে উপরে এবং অপরটি “top-down” বা উপর থেকে নিচে।
“bottom-up” পদ্ধতিতে, বিভিন্ন উপকরণ এবং ডিভাইসগুলো আণবিক উপাদানগুলো থেকে তৈরি করা হয় যা আণবিক নীতির দ্বারা রাসায়নিকভাবে নিজেদেরকে একত্রিত করে। অর্থাৎ ক্ষুদ্র আকারের জিনিস দিয়ে বড় আকারের জিনিস তৈরি করা হয়।
“top-down” পদ্ধতিতে ন্যানো-অবজেক্টগুলি পারমাণবিক স্তরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই বৃহত্তর বস্তু থেকে নির্মিত হয়। টপ-টু-ডাউন পদ্ধতিতে কোন জিনিসকে কেটে ছোট করে তাকে নির্দিষ্ট আকার দেয়া হয়।
আমাদের বর্তমান ইলেক্ট্রনিক্স হল, “top-down” প্রযুক্তি। আর ন্যানোটেকনোলজির হল “bottom-up” প্রযুক্তি।
ন্যানো টেকনোলজির ব্যবহার
কম্পিউটার হার্ডওয়্যার তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
কম্পিউটার এর
সাথেও ন্যানোটেকনোলজি
সম্পর্কিত। কম্পিউটার
এর ভিতর
যে প্রসেসর
আছে, তা অসংখ্য ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র ন্যানোমিটার
স্কেলের সার্কিট।
আর তাতে
ব্যবহৃত হচ্ছে
ন্যানোটেকনোলজি। ইন্টেল প্রসেসরে,
সিলিকন এর
উপর প্যাটার্ণ
করে সার্কিট
বানান হয়
তার বর্তমান
সাইজ হল
১০০ ন্যানোমিটার।
ভবিষ্যতে এর
আকার হবে
৫০ ন্যানোমিটার।
কম্পিউটারের হার্ডডিস্কের
তথ্য সংরক্ষণের
ক্ষমতা দিন
দিন বাড়ছে
ন্যানোটেকনোলজির প্রয়োগের
কারণে।
ন্যানো রোবট তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহার করে
অতি ক্ষুদ্র
রোবট তৈরির
গবেষণা চলছে
, যার সাহয্যে
মানবদেহের অভ্যন্তরের
অস্ত্রপচার সম্ভব
হবে।
ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহাররে ফলে ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতি
আকারে ছোট, ওজনে হালকা
এবং বিদ্যুৎ
সাশ্রয়ী হচ্ছে।
জ্বালানি তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
কম খরচে
জ্বালানি তৈরি,
এবং বিভিন্ন
প্রকার ব্যাটারির
জন্য ফুয়েল
সেল তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হচ্ছে।
প্যাকেজিং ও প্রলেপে ন্যানো টেকনোলজি
বিভিন্ন খাদ্যজাত
পণ্যের প্যাকেজিং
ও প্রলেপ
তৈরিতে ন্যানো
টেকনোলজি ব্যবহৃত
হচ্ছে।
ঔষধ তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
স্মার্ট ড্রাগ
তৈরিতে ঔষধ
শিল্পে ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হচ্ছে।
খেলাধুলার সামগ্রী তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
টেনিস বলের
স্থায়িত্ব বৃদ্ধি,
বাতাসে গলফ
বলের দিক
ঠিক রাখার
জন্য, র্যাকেটের শক্তি
ও স্থায়িত্ব
বৃদ্ধির জন্য ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হচ্ছে।
বস্ত্র শিল্পে ন্যানো টেকনোলজি
বস্ত্র শিল্পে
কাপড়ের ওজন
ও ঘনত্ব
ঠিক রাখার
জন্য ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হচ্ছে।
কৃত্তিম অঙ্গ-পতঙ্গ তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
ন্যানো টেকনোলজির
সাহায্যে বিভিন্ন
কৃত্তিম অঙ্গ-পতঙ্গ তৈরি
সম্ভব।
টিটানিয়াম ডাই-অক্সাইড তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
সানস্ক্রিন এ
ব্যবহৃত টিটানিয়াম ডাই-অক্সাইড তৈরিতে ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হয়।
বাতাস পরিশোধনে ন্যানো টেকনোলজি
শিল্পকারখানা হতে
নির্গত ক্ষতিকারক
ধোঁয়াকে ন্যানো টেকনোলজির
সাহায্যে রাসায়নিক
বিক্রিয়ার মাধ্যমে
অক্ষতিকারক গ্যাসে
রূপান্তর করে
বাতাস পরিশোধন
করা যায়।
মহাকাশ অভিযানে ন্যানো টেকনোলজি
মহাকাশ অভিযানে
ব্যবহৃত বিভিন্ন
নভোযানকে হালকা
করে তৈরি
করতে ন্যানো টেকনোলজি
ব্যবহৃত হয়।
কোন প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের ভোগ্যপণ্য ছোট হতে থাকে?
ন্যানো টেকনোলজি কিভাবে আমাদের উপকারে আসে ?
ন্যানো টেকনোলজির সুবিধা
১। ন্যানোটিউব,
ন্যানোপার্টিকেল ইত্যাদি
দ্বারা তৈরি
পণ্য অধিক মজবুত
ও টেকসই,
আকারে তুলনামূলক
ছোট এবং
ওজনে হালকা।
২। ন্যানো
টেকনোলজির প্রয়োগে
উৎপাদিত ঔষধ
“স্মার্ট ড্রাগ”
ব্যবহার করে
দ্রুত আরগ্য
লাভ করা
যায়।
৩। খাদ্যজাত
পণ্যের প্যাকেজিং
এর সিলভার
তৈরির কাজে।
৪। ন্যানো
ট্রান্সজিস্টর, ন্যানো ডায়োড,
প্লাজমা ডিসপ্লে
ইত্যাদি ব্যবহারের
ফলে ইলেকট্রনিক
শিল্পে বৈপ্লবিক
পরিবর্তন হচ্ছে।
৫। ন্যানো
প্রযুক্তি দ্বারা
তৈরি ব্যাটারি,
ফুয়েল সেল,
সোলার সেল
ইত্যাদির মাধ্যমে
সৌরশক্তিকে অধিক্তর
কাজে লাগানো
যায়।
৬। ন্যানো
টেকনোলজির প্রয়োগের
ফলে উৎপাদিত
ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্র
বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী।
ন্যানো টেকনোলজির অসুবিধা
১। ন্যানোটেকনোলজি
দিয়ে সার্কিট
বানানোর প্রধান
সমস্যা হল,
স্থির বিদ্যুৎ।
সাধারণ ইলেক্ট্রিক
সার্কিটের মধ্যে
এই স্থির
বিদ্যুৎ থেকে
সার্কিট কে
রক্ষা করার
ব্যবস্থা থাকে।
যদি তা
না করা
হত, তাহলে কোন
কারণে স্থির
বিদ্যুৎ বৈদ্যুতিক
সারঞ্জামকে নষ্ট
করে দিত।
কিন্তু ন্যানোটেকনোলজির
ক্ষেতে বৈদ্যুতিক
সার্কিট কল্পনাতিত
ছোট হয়ে
যায় বলে
গতানুগতিক পদ্ধতিতে
রক্ষা করা
সম্ভব নয়।
প্রকৃতপক্ষে ছোটসার্কিটে
স্থিরবিদ্যুত প্রায়
১৫০০০ সেন্টিগ্রেড
এর মত
তাপ সৃষ্টি
করে। এই
তাপে সার্কিট
এর উপকরণ
গলে, সেই সার্কিটটিকে নষ্ট
করে দিতে
পারে। এই
কারণে ১৯৯৭
এর পরে
IC সার্কিটে গতানুগতিক
ভাবে ব্যবহৃত
এলুমিনিয়ামের পরিবর্তে
তামা ব্যবহৃত
হয়। কেননা
তামার গলনাঙ্ক
১০৮৩ যেখানে
এলুমিনিয়ামের গলনাঙ্ক
৬৬০০ সেন্টিগ্রেড।
ফলে অধিক
তাপমাত্রাতেও তামা
এ্যালুমিনিয়ামের তুলনায়
ভাল কাজ
করবে।
২। ন্যানো
টেকনোলজি ব্যয়বহুল।
ফলে এই
প্রযুক্তির প্রয়োগে
উৎপাদিত পন্য
ব্যয়বহুল।
৩। ন্যানোপার্টিকেল
মানুষের শরীরের
জন্য ক্ষতিকর।
ICT ব্যবহারে নৈতিকতা ও সমাজ জীবনে ICT এর প্রভাব।
এই পাঠ শেষে যা যা শিখতে পারবে-
১। প্রতিষ্ঠান
ও ব্যক্তিগত
ক্ষেত্রে ICT ব্যবহারে নৈতিকতা
ব্যাখ্যা করতে
পারবে।
২। সমাজ
জীবনে ICT এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব ব্যাখ্যা
করতে পারবে।
যে কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারকারী ব্যক্তির নৈতিকতার বিষয়ে নিম্নলিখিত নিয়মসমূহ মেনে চলা উচিৎঃ
১। প্রতিষ্ঠানের
সকল গোপনীয়
তথ্যের গোপনীয়তা
এবং বিশ্বস্ততা
রক্ষা করা।
২। কোন
তথ্যের ভুল
উপস্থাপন না
করা।
৩। অনুমোদন
ছাড়া চাকুরিদাতার
সম্পদ ব্যবহার
না করা।
৪। অফিস
চলাকালীন সময়ের
মধ্যে চ্যাট
বা ইন্টারনেট
ব্রাউজ করে
অযথা সময়
নষ্ট না
করা।
৫। ইন্টারনেটে
অন্যের প্রতি
অসম্মান প্রদর্শন
না করা।
৬। ভাইরাস
ছড়ানো, স্প্যামিং ইত্যাদি
কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত
করা।
একজন সুনাগরিকের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে যে নৈতিকতা মেনে চলা উচিৎঃ
১। তথ্য
প্রযুক্তির মাধ্যমে
নিজের দক্ষতা
ও জ্ঞান
কাজে লাগিয়ে
জনগণকে সাহায্য
করা।
২। তথ্য
ও যোগাযোগ
প্রযুক্তি আইন
এবং নীতিমালা
মেনে চলা।
৩। জনগণের
সমস্যার কারণ
হয় এমন
কোন তথ্যের
ভুল উপস্থাপন
না করা।
৪। ব্যক্তিগত
অর্জনের জন্য
অবৈধভাবে তথ্য
প্রযুক্তির ব্যবহার
না করা।
কম্পিউটার ইথিকস এর বিষয়ে দশটি নির্দেশনাঃ
১। অন্যের
ক্ষতি করার
জন্য কম্পিউটার
ব্যবহার না
করা।
২। অন্য
ব্যক্তির কম্পিউটারের
কাজের উপর
হস্তক্ষেপ না
করা।
৩। অন্য
ব্যক্তির ফাইলসমূহ
হতে গোপনে
তথ্য সংগ্রহ
না করা।
৪। চুরির
উদ্দেশ্যে কম্পিউটার
ব্যবহার না
করা।
৫। মিথ্যা
সাক্ষ্য প্রমাণ
বহনের জন্য
কম্পিউটারকে ব্যবহার
না করা।
৬। পাইরেটেড
সফটওয়্যার ব্যবহার
না করা।
৭। অনুমতি
ব্যতিরেকে অন্যের
কম্পিউটার রিসোর্স
ব্যবহার না
করা ।
৮। অন্যের
বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত
ফলাফলকে আত্নসাৎ
না করা।
৯। প্রোগ্রাম
লেখার পূর্বে
সমাজের উপর
তা কী
ধরণের প্রভাব
ফেলবে সেটি
চিন্তা করা।
১০। কম্পিউটারকে
ওই সব
উপায়ে ব্যবহার
করা যেন
তা বিচার
বিবেচনা ও
শ্রদ্ধা প্রদর্শন
করে।
সফটওয়্যার পাইরেসিঃ
সফটওয়্যার পাইরেসি
বলতে অনুমোদিত
মালিক বা
প্রস্তুতকারীর বিনা
অনুমতিতে কোন
সফটওয়্যার কপি
করা, ব্যবহার করা,
নিজের নামে
বিতরণ করা
কিংবা কোন
প্রকার পরিবর্তনের
মাধ্যমে নিজের
বলে চালিয়ে
দেওয়া ইত্যাদি
কার্যক্রমকে বুঝায়।
সাইবার ক্রাইমঃ
ইন্টারনেটকে কেন্দ্র
করে যে
সকল কম্পিউটার
ক্রাইম সংঘটিত
হয় তাদেরকে
বুঝায়।
সাইবার আক্রমণঃ
সাইবার আক্রমণ
এক ধরণের
ইলেক্ট্রনিক আক্রমণ
যাতে ক্রিমিনালরা
ইন্টারনেটের মাধ্যমে
অন্য কারও
সিস্টেমে বিনা
অনুমতিতে প্রবেশ
করে ফাইল,
প্রোগ্রাম কিংবা
হার্ডওয়্যার ধ্বংস
বা ক্ষতি
সাধন করে।
হ্যাকিংঃ
সাধারণত হ্যাকিং
একটি প্রক্রিয়া
যার মাধ্যমে
কেউ কোন
বৈধ অনুমতি
ব্যতীত কোন
কম্পিউটার বা
কম্পিউটার নেটওয়ার্কে
প্রবেশ করে।
যারা হ্যাকিং
করে তারা
হচ্ছে হ্যাকার।
মোবাইল ফোন,
ল্যান্ড ফোন,
গাড়ি ট্র্যাকিং,
বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স
ও ডিজিটাল যন্ত্র
বৈধ অনুমতি
ছাড়া ব্যবহার
করলে তা
ও হ্যাকিং
এর আওতায়
পড়ে। হ্যাকাররা সাধারনত
এসব ইলেকট্রনিক্স
যন্ত্রের ত্রুটি
বের করে
তা দিয়েই
হ্যাক করে।
হ্যাকারদের চিহ্নিত
করা হয়
Hat বা টুপি
দিয়ে। তিন
প্রকারের হ্যকার
রয়েছে। যথাঃ
১। White hat hacker
২। Grey hat hacker
৩। Black hat hacker
White
hat hacker: একজন white hat hacker একটি সিকিউরিটি
সিস্টেমের ত্রুটি
গুলো বের
করে এবং
ঐ সিকিউরিটি
সিস্টেমের মালিককে
ত্রুটির বিষয়ে
দ্রুত অবহতি
করে। সিকিউরিটি
সিস্টেমটি হতে
পারে একটি
কম্পিউটার, একটি কম্পিউটার
নেটওয়ার্ক, একটি ওয়েবসাইট,
একটি সফটওয়্যার
ইত্যাদি।
Grey
hat hacker: একজন Grey hat hacker যখন একটি সিকিউরিটি
সিস্টেমের ত্রুটি
গুলো খুজে
বের করে তখন সে
তার মন
মত কাজ
করে। সে
ইচ্ছে করলে
ঐ সিকিউরিটি
সিস্টেমের মালিককে
ত্রুটি জানাতে
পারে অথবা
তথ্য নিজের
স্বার্থের জন্য
ব্যবহারও করতে
পারে। বেশির
ভাগ হ্যকার
এ ক্যাটাগরির
মধ্যে পড়ে।
Black
hat hacker: একজন Black hat hacker যখন কোন একটি
সিকিউরিটি সিস্টেমের
ত্রুটি খুজে
বের করে,
তখন দ্রুত
ঐ ত্রুটি
কে নিজের
স্বার্থে কাজে
লাগায়। অর্থাৎ
ঐ সিস্টেমটি
নিজের কন্ট্রোলে
নিয়ে নেয়
অথবা ভাইরাস
ছড়িয়ে দেওয়ার
মাধ্যমে সিস্টেমটি
নষ্ট করে
দেয়।
স্প্যাম:
ই-মেইল একাউন্টে
প্রায়ই কিছু
কিছু অচেনা
ও অপ্রয়োজনীয়
ই-মেইল
পাওয়া যায়
যা আমাদের
বিরক্তি ঘটায়।
এই ধরণের
ই-মেইলকে
সাধারণত স্প্যাম
মেইল বলে।
যখন কোন
ব্যক্তি বা
প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট
কোন একটি
ইমেইল অ্যাড্রেসে
শতশত এমনকি
লক্ষ লক্ষ
মেইল প্রেরণের
মাধ্যমে সার্ভারকে
ব্যস্ত বা
সার্ভারের পারফর্মেন্সের
ক্ষতি করে
বা মেমোরি
দখল করার
এই পদ্ধতিকে
স্প্যামিং বলে।
স্পুফিং:
স্পুফিং শব্দের
অর্থ হলো
প্রতারনা করা,
ধোঁকা দেওয়া।
নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির
ক্ষেত্রে স্পুফিং
হলো এমন
একটি অবস্থা
যেখানে কোন
ব্যক্তি বা
কোন একটি
প্রোগ্রাম মিথ্যা
বা ভুল
তথ্য উপস্থাপনের
মাধ্যমে নেটওয়ার্কে
বিভ্রান্ত করে
এবং এর
সিকিউরিটি সিস্টেমে
অনুপ্রবেশ করে
অনৈতিকভাবে সুবিধা
আদায় করে।
ফিশিং( Phishing):
ইন্টারনেট ব্যবস্থায়
কোনো সুপ্রতিষ্ঠিত
ওয়েবসাইট সেজে
প্রতারণার মাধ্যমে
কারো কাছ
থেকে ব্যক্তিগত
তথ্য, যেমন ব্যবহারকারী
নাম ও
পাসওয়ার্ড, ক্রেডিট কার্ডের
তথ্য ইত্যাদি
সংগ্রহ করাকে
ফিশিং বলে।
ইমেইল ও
ইন্সট্যান্ট মেসেজের
মাধ্যমে সাধারণত
ফিশিং করা
হয়ে থাকে।
প্রতারকেরা তাদের
শিকারকে কোনোভাবে
ধোঁকা দিয়ে
তাদের ওয়েবসাইটে
নিয়ে যায়।
ঐ ওয়েবসাইটটি
সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর
ইমেইল, ব্যাংক বা
ক্রেডিট কার্ডের
আসল ওয়েবসাইটের
চেহারা নকল
করে থাকে।
ব্যবহারকারীরা সেটাকে
আসল ওয়েবসাইট
ভেবে নিজের
তথ্য প্রদান
করলে সেই
তথ্য প্রতারকদের
হাতে চলে
যায়।
ভিশিং(Vishing):
মোবাইল, টেলিফোন, ইন্টারনেট ভিত্তিক
বিভিন্ন ফোন
বা অডিও
ব্যবহার করে
ফিশিং করাকে
ভিশিং বা
ভয়েস ফিশিং
বলা হয়।
যেমনঃ ফোনে
লটারী বিজয়ের
কথা বলে
এবং টাকা
পাঠানোর কথা
বলে ব্যক্তিগত
তথ্য নেওয়া।
প্লেজিয়ারিজম( Plagiarism ):
কোন ব্যাক্তি
বা প্রতিষ্ঠানের
কোন সাহিত্য,
গবেষণা বা
সম্পাদনা কর্ম
হুবহু নকল
বা আংশিক
পরিবর্তন করে
নিজের নামে
প্রকাশ করাই
হলো প্লেজিয়ারিজম।
সমাজ জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইতিবাচক প্রভাবঃ
১। খুব
সহজে তথ্য
পাওয়া যায়।
২। পৃথিবীর
যেকোন স্থানে
তাৎক্ষণিক যোগাযোগ
করা যায়।
৩। জীবন
যাত্রার মান
উন্নয়ন হয়েছে।
৪। মানুষের
কাজের দক্ষতা
ও সক্ষমতা
বৃদ্ধি পেয়েছে।
৫। ব্যবসা-বাণিজ্যের
সম্প্রসারণ হয়েছে
ফলে কর্মসংস্থানের
সুযোগ সৃষ্টি
হয়েছে।
৬। চিকিৎসা
ক্ষেত্রে সেবা
পাওয়া সহজ
হয়েছে।
৭। শিক্ষা
গ্রহণ বা
প্রদান করা
সহজতর হয়েছে।
সমাজ জীবনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির নেতিবাচক প্রভাবঃ
১। ইন্টারনেট
সহজলভ্য হওয়ায়
যুবক বা
বিশেষ করে
শিশু-কিশোরদের
বিপথগামী হওয়ার
প্রবণতা বাড়ছে।
২। ব্যক্তিগত
গোপনীয়তা নষ্ট
হচ্ছে।
৩। মানুষ
যন্ত্রনির্ভর হওয়ায়
বেকারত্ব বেড়ে
যাচ্ছে ফলে
অপরাধ কর্ম
বেশি সংঘঠিত
হচ্ছে।
৪। ভিনদেশি
সংস্কৃতির আগ্রাসনে
দেশি সংস্কৃতি
হারাতে চলছে।
৫। বিভিন্ন
সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যম ব্যবহারে
ফলে বিবাহ-বিচ্ছেদের ঘটনা
ঘটছে।
Comments
Post a Comment
Thanks