কোণ
কোণ
কোণ কত প্রকার
কোণের নির্দিষ্ট প্রকারভেদ করা একটু কঠিন। তবে আকার-আকৃতি, গঠন ও পরিমাপের ভিত্তিতে কোণের একটি তালিকা নিচে দেওয়া হলোঃ
- শুণ্য কোণ
- সূক্ষ্মকোণ
- সমকোণ
- স্থূলকোণ
- সরলকোণ
- প্রবৃদ্ধ কোণ
- পূর্ণ কোণ
- তির্যক কোণ
- বিপ্রতীপ কোণ
- সন্নিহিত কোণ
- পূরক কোণ
- সম্পূরক কোণ
- পরিপূরক কোণ
- অনুরূপ কোণ
- একান্তর কোণ
- ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ
শুণ্য কোণ
যে কোণের পরিমাপ 0° তাকে শুণ্য কোণ বলে। এক্ষেত্রে, আসলে কোনো কোণ উৎপন্ন হয়নি।
সূক্ষ্মকোণ কোণ
এক সমকোণ বা ৯০° অপেক্ষা ছোট কোণকে সূক্ষ্মকোণ বলে।
সমকোণ
যে কোণের পরিমাপ ৯০° তাকে সমকোণ বলে।
স্থূলকোণ
৯০° অপেক্ষা বড় এবং ১৮০° অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সমকোণ অপেক্ষা বড় এবং সরলকোণ অপেক্ষা ছোট কোণকে স্থূলকোণ বলে।
প্রবৃদ্ধ কোণ
১৮০° অপেক্ষা বড় এবং ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, সরলকোণ অপেক্ষা বড় এবং পূর্ণ কোণ বা ৩৬০° অপেক্ষা ছোট কোণকে প্রবৃদ্ধ কোণ বলে।
পূর্ণকোণ
যে কোণের পরিমাপ ৩৬০° তাকে পূর্ণকোণ বলে।
তির্যক কোণ
যে কোণের পরিমাপ ৯০° নয় বা ৯০° এর কোনো গুণিতক নয় তাকে তির্যক কোণ বলে।
বিপ্রতীপ কোণ
একটি কোণের বিপরীত রশ্মি দুইটি ঐ কোণের বিপরীতে যে কোণ উৎপন্ন করে তাকে পূর্বের কোণের বিপ্রতীপ কোণ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, দুইটি পরস্পরচ্ছেদী সরলরেখা কোনো একটি বিন্দুতে মিলিত হলে, মিলিত বিন্দুতে দুই জোড়া বিপরীত কোণ উৎপন্ন হয়, প্রতিজোড়া বিপরীত কোণের একটিকে অপরটির বিপ্রতীপ কোণ বলে। বিপ্রতীপ কোণদ্বয় পরস্পর সমান হয়।
সন্নিহিত কোণ
একই সমতলে অবস্থিত দুইটি কোণের শীর্ষবিন্দু ও একটি রশ্মি যদি সাধারণ হয় এবং কোণ দুইটি, সাধারণ রশ্মির বিপরীত দিকে অবস্থান করে, তবে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে। যদি একই শীর্ষবিশিষ্ট দুইটি কোণের একটি সাধারণ বাহু থাকে এবং কোণ দুইটির কোনো অভ্যন্তরস্থ বিন্দু সাধারণ না হয়, তাহলে কোণ দুইটিকে পরস্পর সন্নিহিত কোণ বলে।
পূরক কোণ
দুইটি কোণের যোগফল ৯০° বা এক সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির পূরক কোণ বলে। পরস্পর পূরক কোণ দুইটি যদি সন্নিহিত কোণ হয়, তবে সন্নিহিত কোণ দুইটির সাধারণ বাহু ব্যতীত অপর বাহু দুইটি বাহু পরস্পর লম্ব হয়। ইউক্লিডিও জ্যামিতি অনুযায়ী, একটি সমকোণী ত্রিভুজের সূক্ষ্মকোণদ্বয়ের একটি অপরটির পূরক কোণ। কারণ মনেকরি, সমকোণী ত্রিভুজ ABC -এ ∠B = ৯০°। আবার ত্রিভুজের তিনকোণের সমষ্টি ১৮০°.
সম্পূরক কোণ
দুইটি কোণের যোগফল ১৮০° বা দুই সমকোণ হলে কোণ দুইটির একটিকে অপরটির সম্পূরক কোণ বলে। অতএব পরস্পর সম্পূরক কোণ দুইটির সমষ্টি একটি সরলকোণ তৈরি করে। পরস্পর সম্পূরক কোণ দুইটি যদি সন্নিহিত কোণ হয়, তবে সন্নিহিত কোণ দুইটির সাধারণ বাহু ব্যতীত অপর বাহু দুইটি একই সরলরেখায় অবস্থিত হয়। এই ক্ষেত্রে, কোণ দুইটি রৈখিক যুগল কোণ বলেও পরিচিত। সম্পূরক কোণ দুইটি একই রেখায় হতে হবে – এমন কোনো শর্ত নেই। সম্পূরক কোণ দুইটি আলাদা দুই জায়গাতেও থাকতে পারে। যেমন – সামান্তরিকের সন্নিহিত কোণ দুইটি পরস্পর সম্পূরক। আরও একটু সুস্পষ্ট করে বললে, ABCD একটি সামান্তরিক হলে, এর যেকোনো বাহু সংলগ্ন কোণ দুইটির যোগফল ১৮০°. আবার বৃত্তে অন্তর্লিখিত চতুর্ভুজের যে কোনো দুইটি বিপরীত কোণ পরস্পর সম্পূরক। অর্থাৎ, বৃত্তে অন্তর্লিখিত চতুর্ভুজের যে কোনো দুইটি বিপরীত কোণের সমষ্টি দুই সমকোণ বা ১৮০°।
পরিপূরক কোণ
দুইটি কোণের যোগফল ৩৬০° বা চার সমকোণ হলে কোণ দুইটিকে পরস্পর পরিপূরক কোণ বলে।
অনুরূপ কোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসব কোণ জোড়া ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির একটি অন্তঃস্থ কোণ এবং অপরটি বহিঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর অনুরূপ কোণ বলে। অনুরূপ কোণকে আরেকভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় – তা হলোঃ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া বা আটটি কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে প্রত্যেক জোড়ার অন্তর্গত কোণ দুইটিকে পরস্পর অনুরূপ কোণ বলা হয় যদি ও কেবল যদি তারা নিচের শর্তগুলো পূরণ করেঃ
- কোণ দুইটির শীর্ষবিন্দু ভিন্ন হয়।
- কোণ দুইটির উভয়েই ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে।
- কোণ দুইটির একটি অন্তঃস্থ কোণ এবং অপরটি বহিঃস্থ কোণ হয়।
এরূপ চার জোড়া কোণ পাওয়া যায়।
একান্তর কোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যেসব কোণ জোড়া ছেদকের বিপরীত পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ অথবা উভয়েই বহিঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর একান্তর কোণ বলে। একান্তর কোণকে অন্যভাবে সংজ্ঞায়িত করলে দাঁড়ায়ঃ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া বা আটটি কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে প্রত্যেক জোড়ার অন্তর্গত কোণ দুইটিকে পরস্পর একান্তর কোণ বলা হয় যদি ও কেবল যদি তারা নিচের শর্তগুলো পূরণ করেঃ
- কোণ দুইটির শীর্ষবিন্দু ভিন্ন হয়।
- কোণ দুইটি ছেদকের বিপরীত পাশে অবস্থান করে।
- কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ অথবা উভয়েই বহিঃস্থ কোণ হয়।
এরূপ চার জোড়া কোণ পাওয়া যায়।
ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি ছেদক রেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে ভিন্ন শীর্ষবিন্দু বিশিষ্ট যে দুই জোড়া কোণ ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে এবং কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ হয়, সেই কোণ জোড়াকে পরস্পর ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ বলে। ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণকে অন্যভাবে সংজ্ঞায়িত করলে দাঁড়ায়ঃ
দুইটি সমান্তরাল সরলরেখাকে অপর একটি সরলরেখা ছেদ করলে যে চার জোড়া বা আটটি কোণ উৎপন্ন হয়, তাদের মধ্যে যে দুই জোড়ার প্রত্যেক জোড়ার অন্তর্গত কোণ দুইটিকে পরস্পর ধারাবাহিক অন্তঃস্থ কোণ বলা হয় যদি ও কেবল যদি তারা নিচের শর্তগুলো পূরণ করেঃ
- কোণ দুইটির শীর্ষবিন্দু ভিন্ন হয়।
- কোণ দুইটি ছেদকের একই পাশে অবস্থান করে।
- কোণ দুইটির উভয়েই অন্তঃস্থ কোণ হয়।
এরূপ দুই জোড়া কোণ পাওয়া যায়।
Comments
Post a Comment
Thanks