টনিসিটি কি?
টনিসিটি :
অর্ধভেদ্য একটি পর্দা দ্বারা পৃথককৃত দুটি তরল পদার্থ, পর্দার উপর যে চাপ প্রয়োগ করে সেটাই অসমোটিক প্রেসার।এক একটা ঘনমাত্রার তরলের অসমোটিক প্রেসার ও একেক রকম হবে।উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে,একটা রশির দুই দিকে দুজন মানুষ ধরে টানাটানি করছে।এখন স্বভাবত যার গায়ে শক্তি বেশি সে দড়িটিকে নিজের দিকে বেশি করে টেনে নিয়ে আসবে।ঠিক তেমনি যে দ্রবণের ঘনত্ব বেশি থাকবে সে তত বেশি চাপ দেবে পর্দার উপর।আর তার অসমোটিক প্রেসারও বেশি হবে।এখন আমরা এই অসমোটিক প্রেসারকে পরিমাপ করবো।কিন্তু এই চাপের এককটা কি হবে?
হ্যা ঠিকই ধরেছো এই চাপের এককের নামেই হলো টনিসিটি।
এই টনিসিটি কে আবার আমরা তিন ভাগে ভাগ করতে পারি,
১) হাইপোটনিক
২)আইসোটনিক
৩)হাইপারটনিক
হাইপোটনিক : হাইপো একটা গ্রীক শব্দ যার আবিধানিক অর্থ কম মাত্রা। অর্থাৎ হাইপোটনিক দ্রবণ হলো সেই সমস্ত দ্রবণ যা অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা বেষ্টিত অংশের ঘনত্বের চেয়ে বাইরের ঘনত্ব কম থাকবে।তখন স্বভাবত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কম ঘনত্বের স্থান থেকে বেশি ঘনত্বের দিকে তরলের প্রবাহ চলতে থাকবে।এই প্রবাহ ততক্ষণ চলবে,যতক্ষণ পর্যান্ত ভেতর ও বাইরের ঘনত্ব সমান না হবে।
আমরা যদি এক লিটার পানিতে কয়েকটা রেড ব্লাড সেল দিই তবে কি ঘটবে?
যেহেতু রেডব্লাড সেলের আবরণটি একটি অর্ধভেদ্য পর্দা এবং এর ভেতরের তরলের ঘনত্ব বাইরের ঘনত্ব থেকে বেশি তাই ব্যাপন হবে।পানি শোষণ করতে করতে এক সময় কোষের পর্দা ফেটে যাবে।অর্থাৎ কোষের লাইসিস হয়ে কোষ ধ্বংশ হয়ে যাবে।
আইসোটনিক :আইসো একটা গ্রীক শব্দ যার আবিধানিক অর্থ সমান বা একই। অর্থাৎ আইসোটনিক দ্রবণ হলো সেই সমস্ত দ্রবণ যা অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা বেষ্টিত অংশের ঘনত্বের ও বাইরের ঘনত্ব সমান থাকবে।তখন কোন ব্যাপন প্রক্রিয়ায় ঘটবেনা।অর্থাৎ বাইরে থেকে তরল ভেতরে ঢুকবে এবং একই ভাবে ভেতর থেকে পানি বাইরে বেরুবে।
আমরা যদি এক লিটার আইসোটনিক দ্রবণে কয়েকটা রেড ব্লাড সেল দিই তবে কি ঘটবে?
যেহেতু রেডব্লাড সেলের আবরণটি একটি অর্ধভেদ্য পর্দা এবং এর ভেতরের তরলের ঘনত্ব ও বাইরের ঘনত্ব একই তাই ভেতর থেকে তরল বাইরে যাবে এবং বাইরে থেকে তরল ভেতরে ঢুকবে।যার ফলে কোষের আকারের কোন পরিবর্তন হবেনা।
হাইপারটনিক :হাইপার একটা গ্রীক শব্দ যার আবিধানিক অর্থ বেশি মাত্রা। অর্থাৎ হাইপারটনিক দ্রবণ হলো সেই সমস্ত দ্রবণ যা অর্ধভেদ্য পর্দা দ্বারা বেষ্টিত অংশের ঘনত্বের চেয়ে বাইরের ঘনত্ব বেশি থাকবে।তখন স্বভাবত ব্যাপন প্রক্রিয়ায় কম ঘনত্বের স্থান থেকে বেশি ঘনত্বের দিকে তরলের প্রবাহ চলতে থাকবে।এই প্রবাহ ততক্ষণ চলবে,যতক্ষণ পর্যান্ত ভেতর ও বাইরের ঘনত্ব সমান না হবে।
আমরা যদি এক লিটার হাইপারটনিক দ্রবনে(যেমন:সোডিয়াম ক্লোরাইড) কয়েকটা রেড ব্লাড সেল দিই তবে কি ঘটবে?
যেহেতু রেডব্লাড সেলের আবরণটি একটি অর্ধভেদ্য পর্দা এবং এর ভেতরের তরলের ঘনত্ব বাইরের ঘনত্ব থেকে কম তাই ব্যাপন হবে।ভেতর থেকে তরল বাইরে বেরিয়ে আসতে থাকবে।অর্থাৎ কোষের সংকোচন হয়ে কোষ ধ্বংশ হয়ে যাবে।
Comments
Post a Comment
Thanks