ব্যাকটেরিয়া (Bacteria)
পেপটডোগ্লিকেন বা মুরিন হ'ল ব্যাকটেরিয়ার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য।কিন্তু মনে রাখা জরুরি যে এটি সায়ানো ব্যাকটেরিয়াতে অনুপস্থিত কিন্ত কিছু কিছু সায়ানো ব্যাকটেরিয়াতে সিওডোগ্লাইকোন নামে একটা স্তর থাকে। পেপটিডোগ্লাইকোন হল একটি পলিমার যা সুগার এবং অ্যামিনো অ্যাসিড সমন্বিত করে যা বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমা ঝিল্লির বাইরে জাল জাতীয় স্তর তৈরি করে কোষের প্রাচীর গঠন করে।
এরা সকলে মনেরা রাজ্যের অন্তর্গত। এদেরকে সাধারনত দুই ভাগে ভাগ করতে পারি।
১)ইউব্যাকটেরিয়া
২)সায়ানোব্যাকটেরিয়া
ইউব্যাকটেরিয়া :
ইউব্যাকটেরিয়া হ'ল এককোষী কোষযুক্ত প্রকেরিয়োটিক অণুজীবজীব।এদেরকে সত্য ব্যাকটেরিয়াও বলা হয়। এদেরকে বিশ্বের সকল অঞ্চলে পাওয়া যায়।সাগর,মহাসাগর,মরুভূমি, তুষারান্চল,অগ্নিগিরি সকল স্থানে এদের পাওয়া যায়।সায়ানোব্যাকটেরিয়া ব্যতীত সব ধরণের ব্যাকটিরিয়া এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। আমরা প্রাত্যহিক জীবনে যে সমস্ত ব্যাকটেরিয়াকে চিনি তারা প্রায় সব ইউব্যাকটেরিয়া।
আর্কিব্যাক্টেরিয়া
ইংরেজি : archaebacteria।
একক প্রাক-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ (Prokaryotes)- বিশিষ্ট জীবকণিকা। এরা ব্যাকটেরিয়া থেকে কিছুটা আলাদা তাই জীববিজ্ঞানে আর্কিয়া নামক জীবজগতের একটি শাখায় এদের স্থান দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতিতে এদের আবির্ভাব ঘটেছিল ব্যাক্টেরিয়া আবির্ভাবের আগে। এদের ক্ষুদ্রতম প্রজাতির আকার এক মাইক্রোমিটারের ১০ ভাগের একভাগ হয়ে থাকে। সবচেয়ে বড় প্রজাতির আর্কিব্যাক্টেরিয়ার আকার হয় ১৫ মাইক্রোমিটার।
আর্কিব্যাক্টেরিয়ার প্রকৃতি অনুসারে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। ভাগগুলো হলো—
মিথেনোজেনাস (methanogens) :এই জাতীয় আর্কিব্যাক্টেরিয়া পাওয়া যায় জলাভূমিতে ও আর্দ্র স্থানে। এরা কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে কিন্তু মিথেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
হ্যালো-ব্যাক্টেরিয়া (halobacteria) : হ্যালো অর্থ লবণাক্ত। এরা উচ্চ লবণাক্ত পরিবেশে বসবাস করে। এরা আলো থেকে শক্তিগ্রহণ করতে পারে। সাধারণ সবুজ উদ্ভিদ যেভাবে সালোকসংশ্লেষণ করে, এদের আলো থেকে শক্তিগ্রহণের প্রক্রিয়াটি তেমন নয়।সমুদ্রের পানিতে এদের অধিক পরিমাণে পাওয়া যায়।
চরম থার্মোফিলিস (extreme thermophiles): এরা অত্যন্ত উত্তপ্ত পরিবেশে বসবাস করে। এছাড়া এরা অতি অম্লীয় পরিবেশেও স্বচ্ছন্দে থাকতে পারে। এদের কোষ প্রাচীরে peptidoglycan থাকে না। অনেক আর্কিব্যাক্টেরিয়া গন্ধক সমৃদ্ধ এলাকায় থাকে। এই কারণে আগ্নেয়গিরির জ্বালমুখে এদের পাওয়া যায়। অনেক ব্যাক্টেরিয়া গন্ধককে শারীরিক বিপাকে ব্যবহার করে এবং সালফিউরিক এ্যাসিড উৎপন্ন করে।এমনকি গরু ছাগলের পাকস্থলীতেও এরা অবস্থান করে।
এক সময় প্রাক্-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ (Prokaryotes)-যুক্ত জৈবসত্তা এবং ব্যাক্টেরিয়াকে আর্কিব্যাক্টেরিয়া রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আর্কিয়া, ব্যাক্টেরিয়া এবং সু-প্রাণকেন্দ্রিক কোষ (Eukaryotic cell) -যুক্ত জৈবসত্তাকে আলাদা আলাদা দলে ভাগ করা হয়েছে।
Comments
Post a Comment
Thanks